মুহাম্মদ ফিরোজ, ভাঙড়: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাল মনের মানুষ, তিনি আমায় খোঁজ রাখেন। জন্মদিনের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠিয়েছেন। হাসপাতাল থেকে ফিরে মমতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ অসুস্থ প্রবীণ নেতা আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা।
৭৫ বছর বয়সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় প্রয়াত হয়েছেন বর্ষীয়ান নেতা সুব্রত মুখার্জী। ৭৭ বছরের প্রবীণ নেতা রেজ্জাক মোল্লা তিনিও অসুস্থ।বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত। হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন। পুরানো দলের কেউ তার শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজ না রাখলেও খোঁজ নেন মমতা। এদিন অসুস্থ রেজ্জাক মোল্লা গ্রামের বাড়িতে বসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের প্রশংসা করে তিনি বলেন, দলকে আরও সংগঠিত করতে হবে শান্তিপূর্ণ ভাবে সবাই কে নিয়ে চলতে হবে। ভাঙড় থেকেই রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলাম, ভাঙড়েই শেষ করেছি।কিন্তু ভাঙড়ের জন্য আমার সর্বদাই মন টানে। এদিন ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকারি সভাপতি আব্দুর রহিম এবং যুব নেতা রশিদ মোল্লা অসুস্থ রেজ্জাক মোল্লাকে দেখতে তার গ্রামের বাড়িতে যান।কয়েক দিন আগেই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখান থেকেই ছুটি পেয়ে ভাঙড়ের বাঁকড়ি গ্রামের বাড়িতে আসেন। এদিন সকালে ফল, মিষ্টি নিয়ে রেজ্জাক সাহেবকে দেখতে যান ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আব্দুর রহিম এবং রশিদ। পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় অসুস্থ হয়ে প্রয়াত হওয়ার পর দলের প্রবীণতম নেতা রেজ্জাক মোল্লার শারীরিক পরিস্থিতির খোঁজ খবর নিতে এবং সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে ছুটে যান তৃণমূল নেতা রহিমবাবু সহ যুব নেতা রশিদ মোল্লা।এমনটাই জানান তৃণমূল নেতা আব্দুর রহিম। দল নিয়ে এবং ভাঙড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ তাদের মধ্যে আলোচনা হয়।
রেজ্জাক মোল্লা নিজে হাঁটাচলা করতে পারেন না।তাকে ধরে বাইরে রৌদ্র নিয়ে এসে বসিয়ে দেওয়া হয়।প্রায় আধঘণ্টা তাদের সঙ্গে গল্পগুজব করেন। ভাঙড়ের দুই তৃণমূল নেতা নান্নু হোসেন এবং অহিদুল ইসলামের মৃত্যুতে নেতৃত্ব শুনতা তৈরি হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
ছাত্র রাজনীতির মধ্যে দিয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি ভাঙড়ের বাঁকড়ি গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান রেজ্জাকের। ১৯৭২ সালে ভাঙড় কেন্দ্র থেকে সিপিএমের টিকিটে জিতে বিধায়ক হন। ১৯৭৭ সাল থেকে তিনি ক্যানিং পূর্ব বিধানসভা থেকে সিপিএমের প্রার্থী। ২০১১ সাল পর্যন্ত সিপিএমের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন।২০১১ সালে রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে রেজ্জাক বার বার দল বিরোধী মন্তব্য করতে থাকেন। ২০১৪ সালে সিপিএম তাঁকে বহিষ্কার করে। ‘ন্যায়বিচার পার্টি’ তৈরি করে সামাজিক আন্দোলনে সামিল ছিলেন কিছুদিন। ২০১৬ সালে তৃণমূলে যোগ দেন। ওই বছরই তৃণমূলের টিকিটে জেতেন ভাঙড়ে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রীর দায়িত্বও পান।
এক সময়ের দাপুটে নেতা এখন অসুস্থ। দীর্ঘ দিন ধরে ভুগছেন কিডনির অসুখে। চোখে সমস্যা আছে। হৃদরোগ আছে। পা ভেঙে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। নিজের পায়ে দাঁড়াতে বা হাঁটাচলা করতে পারেন না। লাঠি বা হুইল চেয়ার সঙ্গী। ভাঙড়ে দেশের বাড়িতেই থাকেন বেশিরভাগ সময়।