দেবশ্রী মজুমদার, শান্তিনিকেতন, বিশ্বভারতীর তিন আন্দোলনকারী পড়ুয়াকে তিন বছরের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্বভারতী যেমন অনমনীয় মনোভাব দেখিয়েছে, তেমনি শিক্ষক, ছাত্র ,কর্মী, অবিজেপি ছাত্র সংগঠন এবং সব অবিজেপি রাজনৈতিক দলগুলো জোট বেঁধে বিশ্বভারতীর অচলায়তন ভেঙে ফেলার রূপরেখা তৈরীর কাজ চলছে। অতিমারীর কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় আন্দোলন ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে না। তবে বিশ্বভারতী খুললেই আন্দোলন সর্বাত্মক হবে। যা থামাবার ক্ষমতা থাকবে না উপাচার্যর, এমনটাই জল্পনা কবির শিক্ষা অঙ্গনে।
বুধবার ছাত্র শিক্ষক ও কর্মীদের দশজনের একটি প্রতিনিধিদল জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বাস ভবনে যান। সেখানে তাঁরা অনুব্রতর সাহায্য চান। অনুব্রত মণ্ডল ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, বিশ্বভারতীতে বড়োসড়ো আন্দোলন করতে চলেছে কর্মীরা। আর তাতেই পূর্ণ সমর্থন জানাবে তৃণমূল কংগ্রেস। সূত্রের খবর এই বৈঠকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে তাদের ক্ষোভ উগরে দেন কর্মী ও অধ্যাপকরা। সম্প্রতি যে “অনৈতিক” ভাবে তিন ছাত্র ছাত্রীকে বহিষ্কার ও দুই অধ্যাপকের সাসপেন্ড করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তারও সমালোচনা করেন তাঁরা।
ইতিমধ্যেই বহিস্কৃত তিন ছাত্রছাত্রীর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি। এমনকি তারা কোন আন্দোলন করলে তাকেও সমর্থন জানাবে তাঁর দল – বলেও জানান দেন অনুব্রত।
বুধবার দুপুরে বিশ্বভারতীর অধ্যাপক – কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকের পর অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “বিশ্বভারতীর অধ্যাপক, কর্মীরা এলেন। উপাচার্য যা মন তাই করছে। তাই আমরা এক্ষুণি ঠিক করেছি যে বিশ্বভারতী স্টাফরা উপাচার্যকে বাড়িতে ঘেরাও করবে। তার সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস, আমরা, পুরো সার্পোট দেবো।”
সেপ্টেম্বর মাসের ২ তারিখের পর যেকোনো দিন উপাচার্যকে ঘেরাও করা হবে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, “এক নাগাড়ে তিন দিন ঘেরাও করে রাখা হবে উপাচার্যকে। ও পারলে আটকাবে। উপাচার্য যেভাবে শুরু করেছে, বিশ্বভারতীর জঞ্জালে ভর্তি হয়ে গেছে… উনি যা মন তাই করছেন, ওর পাগলামিটা ছাড়াতে হবে। পাগল উপাচার্য তো… পাগলামো কী করে ছাড়াতে হয় আমরা জানি।”
এর আগেই উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনেকবার তোপ দেগেছেন অনুব্রত মণ্ডল। সম্প্রতি বিজেপির শহীদ স্মরণ যাত্রাকে বিশ্বভারতীতে স্বাগত জানাবার পরেই, অনুব্রত মণ্ডল ঘোষণা করেছিলেন যে এবার থেকে বিশ্বভারতীতে তৃণমূল কংগ্রেস রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করবে।
গত ১৮ আগস্ট অনুব্রত মণ্ডল বলেন, “এবার বিশ্বভারতীতে সভা করব, রাজনৈতিক কর্মসূচি করব। ওটা এখন পার্টির আখড়া করে দিলো। পারলে রুখবে।” তারপরই ক্যাম্পাসে না হলেও উপাসনা গৃহের সামনে সরকারি রাস্তা দিয়ে রাখীবন্ধনের শোভাযাত্রা বের হয়