পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: শ্রদ্ধা ওয়াকার খুনের ঘটনার নৃশংসতায় কেঁপে উঠেছে গোটা দেশ। এই হত্যাকাণ্ডের রেশের মধ্যেই ফের দিল্লিতে প্রায় একই কায়দায় একটি খুনের ঘটনা ঘটল। খুনের পর দেহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুচিয়ে প্রথমে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রেখে, পরে রাতের অন্ধকারে আবর্জনার স্তূপে ফেলে দেওয়া হল। শ্রদ্ধা কাণ্ডে খুনের তদন্তে নেমেই এই রোহমর্ষক ঘটনার তথ্য পুলিশের সামনে এসেছে। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে মা ও ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দেহ ২২ টুকরো করার অভিযোগ।
দিল্লির ছতরপুরে এক আবাসনে লিভ সঙ্গী শ্রদ্ধার দেহ ৩৫টি টুকরো করে কেটে তার দেহাংশ মেহরৌলির জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসে ২৮ বছরের আফতাব আমিন পুনাওলায়া। এই ঘটনায় জেল হেফাজতে আফতাব। এবার শ্রদ্ধা খুনের ঘটনার মধ্যেই ফের পূর্ব দিল্লির পাণ্ডব নগরে একই অপরাধের ঘটনা এল পুলিশের কাছে।
প্রায় একই কায়দায় এক ব্যক্তির দেহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাটার পর, সেই দেহাবশেষ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখা হয়। তার পর সুযোগ বুঝে সেই দেহাংশগুলি দিল্লির আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে ফেলা হয়। স্বামীকে খুনের অপরাধে স্ত্রী সহ ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত জুন মাসে দিল্লির পাণ্ডবনগর থেকে পুলিশ দেহের কয়েকটি টুকরো উদ্ধার করে। কিন্তু দেহের টুকরোগুলি সম্পূর্ণ পচে–গলে যাওয়ায়, তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। শ্রদ্ধা ওয়াকারের খুনের ঘটনা সামনে আসার পরই পুলিশ অনুমান করে এই দেহের টুকরো শ্রদ্ধার। কিন্তু পরে তদন্তে জানা যায়, দেহটি অঞ্জন দাস নামক এক ব্যক্তির। তিনি দিল্লির পাণ্ডব নগরের বাসিন্দা।
পুলিশের কাছে একটি চার মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে। যেখানে দেখা গিয়েছে, মধ্যরাতে হাতে প্যাকেট নিয়ে কোথাও হেঁটে যাচ্ছেন দুজন। পুলিশের অনুমান, রাতে দেহের টুকরোগুলি ফেলতে যেতেন মা ও ছেলে। সকালের একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা জায়গা চিহ্নিত করছেন।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, শ্রদ্ধাকে খুন করে ফ্রিজে যেভাবে দেহ সংরক্ষণ করে রেখেছিল আফতাব, সেই একই কায়দায় পাণ্ডব নগরের বাসিন্দা অঞ্জন দাসের দেহাংশগুলি খুন করে সংরক্ষণ করা হয়েছিল।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্ত পুনম ও তাঁর ছেলে দীপক গত জুন মাসে অঞ্জন দাস নামক ওই ব্যক্তিকে খুন করেন। তাদের সন্দেহ ছিল, ওই ব্যক্তির অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। স্লিপিং পিল খাইয়ে প্রথমে ওই ব্যক্তিকে অচেতন করেন মা–ছেলে। এরপরে খুন করেন।
সম্প্রতি ঘটে গেছে শ্রদ্ধার ওয়াকার খুনের ঘটনা। পুলিশের অনুমান, সেই ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই, খুনের দায়ে এড়াতে এইভাবে দেহাংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করতে পারেন অভিযুক্তরা। তবে সবই তদন্তসাপেক্ষ্য বলে পুলিশ জানিয়েছে। কবে এই পাণ্ডব নগরের খুনের ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।