পুবের কলম প্রতিবেদক: সম্প্রতি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা সহ নানা সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করেন শিক্ষামন্ত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক লেনদেন নিয়ে এবার নবান্নে ফিনান্স আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করলেন উচ্চ শিক্ষা দফতরে আধিকারিকরা। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স আধিকারিকরা। এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সংক্রান্ত নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। সেই সঙ্গে অধ্যাপক- শিক্ষাকর্মীদের বেতন সংক্রান্ত নানা সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করেন।
রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের মধ্যেই শিক্ষক দিবসের দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, নবান্নের সঙ্গে আলোচনা না করে রাজ্যপাল যদি তাঁর ইচ্ছামতো কাজ করেন, তাহলে রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে আর্থিক অবরোধ শুরু করবেন তিনি। সেই হুমকিতে পাত্তা না দিয়ে সেদিন রাতেই উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তারপর জল গড়িয়েছে অনেক দূর। সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে সার্চ কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছে। তার মধ্যেই বুধবার রাজ্যের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অফিসারকে বৈঠকে ডাকে নবান্ন ।
বুধবার বেলা ১২.৩০ থেকে শুরু হয় বৈঠক। তবে এদিনের বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যদের ডাকা হয়নি। সূত্রের খবর, এদিন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটি, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, ডায়মন্ডহারবার উইমেন্স ইউনিভার্সিটি, কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, মালদহ বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় এবং সিধু কানহু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অফিসাররা নবান্নের অর্থ দফতরের বৈঠকে উপস্থিত হন ।
উল্লেখ্য, , সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্ট করেই জানিয়ে দেয়, রাজ্যপাল আচার্য হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যদের নিয়োগ কর্তা। অর্থাৎ অ্যাপয়ন্টিং অথরিটি। কিন্তু রাজ্যপাল উপাচার্যদের নির্বাচন কর্তা নন, অর্থাৎ সিলেক্টিং অথরিটি নন। এ ব্যাপারে তাঁর কোনও পারদর্শিতা নেই। তাছাড়া রাজ্যপালের কাছে কোনও সিলেকশন কমিটিও নেই।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত ও বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত সাফ জানিয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগের জন্য শীর্ষ আদালতই সার্চ কমিটি গঠন করে দেবে। সুপ্রিম কোর্ট এও নির্দেশ দিয়েছে, সার্চ কমিটিতে কাদের সদস্য করা হবে সে ব্যাপারে যেন রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল এবং ইউজিসি ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩ থেকে ৫ জনের নাম পাঠান। অর্থাৎ প্রত্যেককে তিন থেকে পাঁচ জনের নাম পাঠাতে হবে। তাঁদের মধ্যে থেকে বেছে নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট সার্চ কমিটি গঠন করবে। যে কমিটি স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
কাকতালীয়ভাবে, এদিনের বৈঠকে বসা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অধিকাংশেরই উপাচার্যদের নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মুখ্যমন্ত্রীর আর্থিক অবরোধের হুঁশিয়ারির পর আজকের বৈঠক নিয়ে জল্পনা দানা বেঁধেছে।
সূত্রের খবর, আগামী দিনে সরকার অনুমোদিত এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কীভাবে কাজ চলবে তা নিয়ে আলোচনা হবে বুধবারের বৈঠকে। এছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যরা রাজ্যের সঙ্গে আলাপ আলোচনা না করে কাজ করলে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে সে ব্যাপারেও স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আয়-ব্যয়ের হিসেবও আজ বুঝে নেওয়া হবে নবান্নের তরফে, এমনটাই জানা গেছে।