পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ ভারতের জাতীয় পশু হওয়া উচিৎ ‘গরু’ এমনই মত দিয়েছে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট। বুধবার উত্তরপ্রদেশে ইলাহাবাদ হাইকোর্ট ভারতের জাতীয় পশু হিসেবে গরুকে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে মত দেয়। আদালত বলেছেন, গো-রক্ষা হিন্দুদের মৌলিক অধিকার হওয়া উচিত। ভারতীয় সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল গরু। সেই কথা মাথায় রেখেই কেন্দ্রীয় সরকারের আইন তৈরি করা উচিৎ। গরুকে ভারতের জাতীয় পশু এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য ‘গো-রক্ষা’ মৌলিক অধিকারের অংশ হওয়া উচিৎ বলে মত দিয়েছেন ভারতের এলাহাবাদ হাইকোর্ট। বুধবার ১ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশে গরু জবাই করার অভিযোগে গ্রেফতার ৫৯ বছর বয়সী এক মুসলিমকে জামিন নামঞ্জুর করে জেলে পাঠানোর আদেশ দিয়ে এমন মত দেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি শেখর কুমার যাদব। এদিন শেখর কুমার যাদব বলেন, গরু ভারতীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। গোরক্ষার দায় শুধু কোনও একটি ধর্মের নয়। দেশের সবার উচিৎ গোরক্ষার দায়িত্ব নেওয়া। সরকারের উচিৎ বিল পাশ করে গরুকে অবিলম্বে জাতীয় পশুর মর্যাদা দেওয়া। এবং তার মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করা। একই সঙ্গে এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি আরও বলেন, যারা গরুর ক্ষতি চায় তাদের বিরুদ্ধে কড়া আইন আনুক সরকার৷
আদালত আরও বলে, বেদ এবং মহাভারতের মতো প্রাচীন লেখায় গরুকে গুরুত্বপূর্ণ অংশ তুলে হিসেবে ধরা হয়েছে।
১২ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারপতি বলেছেন, ‘আমরা জানি যে যখন কোনও দেশের সংস্কৃতি এবং বিশ্বাস আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তখন সেই দেশ দুর্বল হয়ে পড়ে।’
আদালত জানায়, শুধু হিন্দুরাই যে গরুর গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন, তা নয়। মুসলিম শাসকরাও নিজেদের আমলে গরুকে ভারতীয় সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করেছিলেন। উদাহরণস্বরূপ, বাবর, হুমায়ুন এবং আকবর ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সময় গো-হত্যার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিলেন। মাইসোরের শাসক হায়দার আলি গো-হত্যাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশে নতুন মাত্রা পেয়েছে ‘গো রাজনীতি’। গো রক্ষার নামে গণপিটুনি থেকে চলছে খুনোখুনির রাজনীতি।
২০১৪ সালে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর থেকে সারা দেশেই গরু নিয়ে আবেগ কয়েকগুণ বেড়েছে। অসম, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের বিজেপি শাসিত সরকার সে রাজ্যগুলিতে আংশিক বা সম্পূর্ণ গোহত্যা নিষিদ্ধ করেছে৷ অসমে এরকমও আইন আনা হয়েছে যে হিন্দু মন্দির রয়েছে এরকম এলাকার ৫ কিলোমিটারের মধ্যে গোহত্যা করা যাবে না। এদিকে এমতবস্থায়, সম্প্রতি উল্টো সুর শোনা গেছে, মেঘালয়ের পশুমন্ত্রী সানবর শুল্লাইয়ের গলায়। তিনি বলেন, রাজ্যের সবাইকে মাছ, মুরগি মাংসের থেকে বেশি করে গো-মাংস খাওয়া ভালো। তিনি দাবিও করেন, বিজেপি কখনও গো মাংস ব্যান করবে না।