দেবশ্রী মজুমদার, রামপুরহাট: “আমরা চাকরি চাইতে আসিনি। হকারি করে সৎভাবে বাঁচার অধিকার ফিরে পাওয়ার দাবি পুনরুদ্ধার করতে এসেছি”। এই সমবেত দৃপ্ত বক্তব্যে শনিবার মুখরিত হলো রামপুরহাট রেলওয়ে চত্বর। শনিবার রেলচত্বরে মঞ্চ করে হকারদের জীবন জীবিকার স্বার্থে বাম শ্রমিক সংগঠন সিটু ও কংগ্রেস শ্রমিক সংগঠন আই এন টি ইউ সি যৌথভাবে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়। তার আগে পাঁচ মাথা থেকে মিছিল করে বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ স্টেশন ম্যানেজারের কাছে ডেপুটেশন জমা দেয় বাম কংগ্রেসের মিলিত শ্রমিক সংগঠন।
উল্লেখ্য, অমৃত ভারত উৎসব উপলক্ষ্যে স্টেশন খালি করার পর কাজ সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও হকারদের আর স্টেশনে উঠতে দেওয়া হচ্ছে না। অভিযোগ, জনগণের রেলকে বেসরকারিকরণের কারিগর মোদি সরকার বহুজাতিক সংস্থার হাতে স্টেশন তুলে দিয়ে ফুড প্লাজার ব্যবসা বাড়াতে চাইছে। আর গরিব মানুষের পেটে লাথি মারতে চাইছে। চলছে রেলওয়ে পুলিশের জুলুম। হকারদের কেস দেওয়া হচ্ছে। এদিন হকারদের পুনরায় ট্রেনে সামগ্রী বিক্রি করতে দেওয়ার দাবিতে বীরভূমের রামপুরহাট রেলষ্টেশনে যৌথভাবে অবস্থান বিক্ষোভ করল সিপিএম ও কংগ্রেস। এদিনের বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন রামপুরহাট রেল ষ্টেশনের প্রায় তিন শতাধিক রেলের হকার ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। হকারদের পাশে বসে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের কংগ্রেসের প্রার্থী, প্রাক্তন বিধায়ক মিল্টন রশিদ, সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য সঞ্জীব বর্মণ।
প্রসঙ্গত, প্রায় মাসখানেক ধরে রেলের হকারদের ষ্টেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। ফলে সমস্যায় পড়েছেন রেলের হকাররা। পরিবার চালাতে গিয়ে আর্থিক সঙ্কটে ভুগছেন তারা।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ রামপুরহাট রেলষ্টেশনে কোন হকারকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ট্রেনেও সামগ্রী বিক্রি করতে দেওয়া হচ্ছে না হকারদের। হকারেরা ষ্টেশনে প্রবেশ করলেই তাদের ধরে ফাইন করছে রেল কর্তৃপক্ষ। তারই প্রতিবাদে এবং রামপুরহাট রেল ষ্টেশনে হকারদের জিনিস পত্র বিক্রি করতে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ অবস্থানে বসে বাম – কংগ্রেস জোট। পরে রামপুরহাট রেল ষ্টেশন ম্যানেজারের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন তারা।
সঞ্জীববাবু বলেন, “করোনা অতিমারির সময় হকারদের অবস্থা করুন হয়েছিল। এমন কিছু হকারদের পরিবার রয়েছে যাদের বাড়িতে নিত্যদিন উনুন পর্যন্ত জ্বলেনি। আর রামপুরহাট রেল কর্তৃপক্ষ সৌন্দরজায়নের নামে ছোট ছোট দোকান উচ্ছেদ করে দিয়েছে। এখন ট্রেনের হকারদের উপর কোপ পড়েছে। আমাদের দাবি অবিলম্বে হকারদের পুনরায় ট্রেনে এবং ষ্টেশনে কাজ করতে দিতে হবে। তারা কাজ ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে”।