পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: জিলহজের ৯ তারিখকে ইয়াওমে আরাফা বলা হয়৷ এই দিনটি বছরের শ্রেষ্ঠ দিন৷
বছরের শ্রেষ্ঠ রাত যেমন লাইলাতুল কদর, তেমনি শ্রেষ্ঠ দিবস হচ্ছে আরাফা দিবস। আরাফাতে পৌঁছাতে পারলেই হজ সম্পন্ন হয়৷ শুক্রবার সেই মহান আরাফা দিবস৷ এই দিনে নফল রোজা রাখা অধিক ফজিলতপূর্ণ। এদিন বিশ্বের বহু মুসলিম রোযা রাখেন এর গুরুত্বের কথা ভেবে৷
হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আরাফার দিনের একটি রোযার বদৌলতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আগের-পরের দুই বছরের গুনাহ মাফ করে দেবেন।
বছরের যেকোনও সময়ই যেকোনও নেক আমল আল্লাহর কাছে অধিক পছন্দনীয়। তবে কিছু কিছু সময়ে কিছু আমলের মারতাবা অন্যান্য সময়ের চেয়ে তুলনামূলক বৃদ্ধি হয়। তেমনি এক আমল আরাফার দিবসের রোযা। যে রোযার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা বান্দার পূর্বের একবছর এবং পরের এক বছরের গোনাহ মাফ করেন সেটাই হল আরাফার দিবসের রোযা।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘ইয়াওমে আরাফার রোযার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে আশাবাদী, তিনি এর দ্বারা আগের এক বছরের ও পরের এক বছরের গোনাহ মাফ করবেন’। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ১১৬২)। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘আরাফার দিনের রোযার সওয়াব এক হাজার দিন রোযা রাখার সমান৷’
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে আরাফা দিবসের রোযা পালনের মাধ্যমে হাদিসে বর্ণিত ফজিলত হাসিলের তাওফিক দান করুন।
আরাফার দিনটির তাৎপর্য: ৯ জিলহজ ইয়াওমে আরাফা বা হাজিদের আরাফার ময়দানে অবস্থানের দিন। এই দিনকেই হজের দিন বলা হয়। এ বছর ৮ জুলাই শুক্রবার ইয়াওমে আরাফা। এ দিন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মুসলমানরা আরাফাতের ময়দানে সমবেত হবেন। এ দিনের ফজিলত ও তাৎপর্য অপরিসীম। এ দিনকে আল্লাহর পক্ষ থেকে রহমত এবং গুনাহ থেকে পরিত্রাণের দিন হিসেবে ঘোষণ দেওয়া হয়েছে।
আরাফা দিবসের পরিচয় : আরাফা শব্দের অর্থ হল পরিচিতি৷ হজরত আদম আ.-কে হিন্দুস্তানে ও হাওয়া আ.-কে জেদ্দায় বেহেশত থেকে অবতরণ করা হয়েছিল। অবতরণের পর তারা পরস্পর পরস্পরকে খুঁজতে খুঁজতে অবশেষে একদিন উভয়ে আরাফাতের ময়দানে আরাফার দিনে মিলিত হলেন এবং একে অপরের মধ্যে পরিচয় ঘটল। এ কারণে ওই স্থানের নাম হল আরাফাত, আর ওই দিনের নাম হল আরাফার দিন।
আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা হাজিদের জন্য ফরয। আরাফাতের ময়দানে হাজিগণ হাজির হয়ে আল্লাহর রহমত তালাশ করেন। সমবেত সবাই ইবাদত-বন্দেগি ও গুনাহ মাফের জন্য কান্নাকাটি করে আল্লাহর জিকির, দোয়া, মুনাজাতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য চেষ্টা করেন। বিশ্বের মুসলমানরাও ওইদিন রোযা রেখে আল্লাহর সন্তুষ্টি হাসিলের চেষ্টা করেন৷