পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিনতে প্রকম্পিত আকাশ-বাতাস। রবিবার ভোর থেকে অর্থাৎ ফজরের নামায শেষ করার পর থেকেই শুরু হয় পবিত্র হজের মূল প্রক্রিয়া। রবিবার ভোরে মক্কা থেকে মিনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন হাজীগণ। পবিত্র হজ শুরুর আগে অত্যন্ত উৎসাহিত ও আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশ থেকে আসা ২০ লক্ষেরও বেশি হজযাত্রী। প্রতিবারের মতো এবারও আল্লাহর মেহমানরা নিষ্ঠার সঙ্গে হজ পালন শুরু করেছেন। মক্কা থেকে তাঁবুর শহর মিনার দুরত্ব প্রায় ৪ কিলোমিটার। ৮ যিলহজ্ব জোহরের নামাযের পূর্বে মিনায় পৌঁছানো সুন্নত। মিনা প্রান্তরে ৫ ওয়াক্ত নামায আদায় ও রাত্রীযাপন সুন্নত আমল। মিনাতে হাজীদের রাত কাটানোর জন্য আলাদা আলাদা তাঁবু রয়েছে। মক্কা থেকে আরাফাতের ময়দানের দিকে যাওয়ার মহাসড়কের পাশেই মিনার অবস্থান। মিনার আয়তন প্রায় ২০ বর্গকিলোমিটার। ২৭ জুন আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহর দুয়ারে নিজেদের উপস্থিতি জানান দেবেন মুসল্লিরা। সেদিন সাদা ইহরাম পরিহিত মুসল্লিদের ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হবে ময়দান। ২৭ জুন, মঙ্গলবার আরাফাতের ময়দান থেকে মুসল্লিরা মাগরিবের নামায আদায় না করেই রওনা দেবেন মুজদালিফার দিকে। সেখানে পৌঁছে মাগরিব ও এশার নামায একসঙ্গে আদায় করবেন। এখানে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাবেন তারা। তারপর মিনার জামারায় (প্রতীকী) শয়তানকে নিক্ষেপের জন্য পাথর সংগ্রহ করবেন। বুধবার সকালে ফজরের নামায শেষে হাজিরা আবার ফিরে আসবেন মিনায়। জামারাতে পাথর নিক্ষেপ ও পশু কোরবানির পর পুরুষরা মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম ত্যাগ করবেন। এরপর পবিত্র কাবা শরিফে বিদায়ী তাওয়াফ করে হজের প্রক্রিয়া শেষ হবে। হজ শেষে যারা আগে মদিনায় যাননি, তারা মদিনায় যাবেন। সেখানে হাজীরা সাধারণত ৪০ ওয়াক্ত নামায আদায় করেন। এরপর শুরু হবে হাজীদের দেশে ফেরার পালা।
এদিকে মুসল্লিদের নিরাপত্তায় নেওয়া হয়েছে ব্যাপক ব্যবস্থা। নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন স্তরের লক্ষাধিক কর্মী দায়িত্ব পালন করছেন নির্ধারিত স্থানগুলোতে। তাঁবুর শহর মিনা সজ্জিত হয়েছে নতুনরূপে, আগের চেয়ে বেশি সুযোগ সুবিধা মিলছে সেখানে। মিনার বিভিন্ন পয়েন্টে কয়েক হাজার অটো ইলেকট্রিক গাড়ি সেবা দিচ্ছে হাজীদের। এদিকে হজযাত্রীদের দিকনির্দেশনা দিতে এবারও বেশ কিছু রোবট মোতায়েন করেছে কর্তৃপক্ষ। পবিত্র কাবাঘরের আঙিনাতেও দেখা গেছে এমনই একটি রোবট। বিশেষ কালো কাপড় গায়ে রোবটটি হজযাত্রীদের স্বাগত জানাচ্ছে। এছাড়া হাজীদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনাও দিচ্ছে। রোবটটি বিশ্বের ১১টি ভাষায় যোগাযোগ করতে পারে। ভাষাগুলো হলো, আরবি, ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, রুশ, ফার্সি, তার্কিশ, চাইনিজ, বাংলা, হাউসা ইত্যাদি। উল্লেখ্য, সউদিতে এ বছর ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। পরের দিন ২৮ জুন সউদি আরবে ঈদুল আযহা।