(ক্যাপশন)
হারামাইন (মক্কা-মদিনা) সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের ভার দেওয়া হয়েছিল মিশরীয় স্থপতি ড. মোহাম্মাদ কামাল ইসমাইলের ওপর। তিনি চেয়েছিলেন, তাওয়াফকারীদের আরাম ও স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য মসজিদুল হারামের মেঝে এমন মার্বেল পাথর দিয়ে ঢেকে দিতে- যার বিশেষ তাপ শোষণ ক্ষমতা রয়েছে। অনেক খোঁজাখুঁজির পর এরকম মার্বেল পাথরের সন্ধান পাওয়া যায় গ্রিসের ছোট্ট একটি পাহাড়ে। আর কোথাও এ ধরনের মার্বেলের মজুদ পাওয়া যায়নি।
বিশেষ প্রতিবেদন: পবিত্র হজ আর কয়েক দিনের অপেক্ষা। হারামাইনের শরিফাইনের পানে ছুটছেন লক্ষ লক্ষ মুসলিম। মক্কা-মদিনায় গিয়ে প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও তাঁরা যখন অনুভব করেন, বাইতুল্লাহ শরিফ ও মসজিদের নববীর মেঝে খুবই শীতল, তাওয়াফ বা হাঁটাহাঁটি করতে সামান্যতম কষ্টও লাগছে না, তখন তারা বিস্মিত হন। বিভিন্ন দেশের মুসল্লিরা অবাক হয়ে যান মসজিদে নববীর ইলেকট্রনিক গম্বুজ ও বিখ্যাত ছাতা দেখেও। হারামাইনের এই তিন সুন্দর নির্মাণশৈলীর নেপথ্যে ছিলেন মিশরীয় আর্কিটেক্ট মুহাম্মাদ কামাল ইসমাইল। শতবর্ষী (১৯০৮-২০০৮) এই স্থপতি তার কর্মজীবনের প্রায় পুরোটা সময় কাটিয়ে দেন মক্কা ও মদিনার দুই মসজিদের সেবায়। কিন্তু পারিশ্রমিক নিতে তাকে রাজি করানো যায়নি কখনই। পারিশ্রমিকের জন্য জোরাজুরি করলে তিনি উলটো প্রশ্ন করতেন, এই দুই পবিত্র মসজিদের জন্য কাজ করে পারিশ্রমিক নিলে শেষ বিচারের দিনে আমি কোন মুখে আল্লাহর সামনে গিয়ে দাঁড়াব? কামাল ইসমাইল ছিলেন ইসলামি স্থাপত্যশৈলীর ওপর তিনটি ডক্টরেট ডিগ্রিপ্রাপ্ত প্রথম মিশরীয় প্রকৌশলী। বাদশাহ ফাহাদের আদেশে তিনি হারামাইন শরিফাইন তথা বাইতুল্লাহ শরিফ ও মসজিদে নববীর নকশা ও সম্প্রসারণের কাজে আত্মনিয়োগ করেছিলেন। এই দুই মসজিদের মেঝেতে কোল্ড মার্বেল, বৈদ্যুতিক গম্বুজ ও ছাতার ধারণার নেপথ্যে ছিলেন তিনি। তবে তাঁর সর্বাধিক প্রসিদ্ধ কাজ হল দুই পবিত্র মসজিদের সম্প্রসারণ। জীবনের অনেকটা সময় এ পবিত্র কাজ পেছনে শেষ করেন তিনি। এই দুই বিখ্যাত মসজিদের কাজ ছাড়াও কামাল ইসমাইল মিশরে কিছু স্থাপত্য নির্মাণ করেছিলেন। ২০০৮ সালের ২ আগস্ট তিনি ইন্তেকাল করেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৯৯ বছর।