পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: ইন্তেকাল করলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট, আবুধাবির শাসক খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন) । মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। শোকের ছায়া আরব দুনিয়ায়। শুক্রবার দেশটির প্রেসিডেন্টের কার্যালয় সূত্রে এই খবর জানানো হয়েছে। আমিরাতের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে শুক্রবার থেকে আগামী ৪০ দিনের জন্য রাষ্ট্রীয় শোক পালন করা হবে। পতাকা অর্ধনমিত রাখার হবে। শোকজ্ঞাপন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সহ বিশ্বের সব নেতারা । এছাড়াও ট্যুইট করে শোকপ্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বিদেশ মন্ত্রী জয়শঙ্কর ও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে ট্যুইটার বার্তায় জানানো হয়েছে, ফেডারেল ও স্থানীয় পর্যায়ে সংস্থাগুলো আগামী তিনদিন বন্ধ থাকবে। এই ছাড়া সরকারি সংস্থা ও বেসরকারি সেক্টরে মন্ত্রণালয়গুলিতেও আগামী তিনদিন শোক পালনে বন্ধ রাখা হবে।
১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন জায়েদ আল নাহিয়ান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি এবং আবুধাবির ১৬তম শাসক ছিলেন জায়েদ আল নাহিয়ান। ২০২০ সালে মার্কিন পৌরহিত্যে ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে ইজরায়েল ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। এই চুক্তির মাধ্যমে কূটনৈতিক স্তরে ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছিল আরব আমিরশাহী। সেই চুক্তি রূপায়ণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন জায়েদ আল নাহিয়ান।
২০১৪ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। তারপরেই তাঁর ক্ষমতার অনেকটাই দিয়ে দেওয়া হয় আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ আল নাহিয়ানের হাতে।
শেখ খলিফা বিন জায়েদ ২০০৪ সালের ৩ নভেম্বর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট ও আবুধাবির শাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। আমিরাতের প্রথম প্রেসিডেন্ট শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের মৃত্যুর পর তার উত্তরসূরী নির্বাচিত হন শেখ খলিফা।
আরব আমিরশাহীর ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন জায়েদ। তাঁর আমলেই মধ্য প্রাচ্যে অন্যতম শক্তিধর দেশ হিসাবে মানচিত্রে উঠে আসে আরব। ব্যবসা এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রেও দেশকে বিশ্বের সেরাদের আসনে বসিয়েছিলেন তিনি। তবে সম্ভবত তাঁর সেরা কীর্তি ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া। অব্রাহাম অ্যাকর্ডস চুক্তির মাধ্যমে ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছিল আরব। ইরানের দাপট কমাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
শেখ খলিফা আমিরাতের তেল-গ্যাস খাতের উন্নয়নসহ দেশটির অর্থনীতি বহুমুখীকরণে সফলভাবে অবদান রেখেছেন। তিনি ফেডারেল ন্যাশনাল কাউন্সিলের সদস্য মনোনয়ন পদ্ধতির বিকাশে একটি উদ্যোগ নিয়েছিলেন, যা সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়।