পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণদের ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করার। সেই নিয়ে নানা মহলে বিতর্কও তৈরি হয়। তবে এই বিষয়ে ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এই ইচ্ছাকে স্বাগত জানিয়েছেন। এই বিষয়টি যাতে কার্যকর হয়, সেই বিষয়ে শিক্ষা দফতরকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে, কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি লাগু করার জন্য প্রতিটি রাজ্যকে অনুরোধ করে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। শিক্ষা যেহেতু কেন্দ্র- রাজ্য যুগ্ম তালিকায় রয়েছে। সেই অনুসারে রাজ্যের শিক্ষা দফতর বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত করে একটি বিশেষ কমিটি।
সেই কমিটি কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতিকে অনুসরণের পাশাপাশি পড়ুয়াদের স্বার্থে কিছু বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করে। সমস্ত উচ্চ শিক্ষা দফতরের তৈরি সিলেবাস প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঠানো হয়েছে। পড়ুয়াদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাঠ শেষে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পাঠ সম্পন্ন হওয়ার পর অথবা কোর্স চলাকালীন পড়ুয়াদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থায়ীভাবে কাজের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রযুক্তি অথবা অন্যান্য পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে স্থানীয় কোনও শিল্পক্ষেত্রে দক্ষতাবৃদ্ধিতে নিযুক্ত রাখতে হবে।
তবে এই নিয়োগ ‘এক্সটারনাল স্টাডিজ’ হিসেবে করা হবে। ক্রিয়েটিভ দক্ষতা বাড়ানোর জন্য ‘স্টুডিও অ্যাকটিভিটি’ করতে হবে।
এছাড়া ছাত্রছাত্রীদের যে বিষয় নিয়ে পড়াশোনা, তার উপর ‘ফিল্ড প্র্যাকটিস-এর ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের স্থানীয় কমিউনিটির মধ্যে নিযুক্ত থাকতে হবে। একই সঙ্গে সেই সমস্ত এলাকায় সেবামূলক কাজের সঙ্গে পড়ুয়াদের নিযুক্ত রাখতে হবে। এই কাজে ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপক ও শিক্ষাকর্মীরা সহযোগিতা করবে।
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী জেলা প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বলেছিলেন, প্রতিটি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়াদের ইন্টার্নশিপের উপর জোর দিতে হবে।
তিনি বলেছিলেন, শুধু পুঁথিগত বিদ্যা নয়, স্কুলের পড়ুয়াদের মূল্যবোধ ও মানবিকতা শেখাতে হবে। ‘ছোটবেলা থেকেই ব্রেনটা তৈরি হয়। কম্পিউটার ক্লাস, স্মার্টক্লাস থাকুক, সেই সঙ্গে মূল্যবোধ ও মানবিকতার ক্লাস আলাদা করে হওয়া উচিত। হিংসা আর নেতিবাচক চিন্তা দূর করতে হবে মন থেকে।
বাংলার ছাত্রছাত্রীদের ভূয়সী প্রশংসা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘বাংলার ট্যালেন্ট বিশ্ব চালায়। সেজন্যই আমি বলি, বাংলায় ছেলেমেয়েরা নাসা থেকে ভাসা সর্বত্রই ছড়িয়ে রয়েছে। বাংলার ব্রেন কোথাও পাবেন না।’
প্রসঙ্গত, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিকেও ইন্টার্নশিপের জন্য প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে স্বাস্থ্য শিবির করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় গিয়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে পড়ুয়াদের। মেডিক্যাল পড়ুয়ারাও রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।