পারিজাত মোল্লা: সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে উঠে উপাচার্য নিয়োগে সার্চ কমিটি সংক্রান্ত মামলা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগের কমিটিতে কেন মুখ্যমন্ত্রী ও উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রতিনিধি থাকবে? এই প্রশ্নে রাজ্য সরকারের কী বক্তব্য? তা তিন সপ্তাহের মধ্যে জানাতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট এর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ । বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য সরকার যে অর্ডিন্যান্স জারি করেছিল, সেই অর্ডিন্যান্সকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে।
উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে এবার রাজ্য ও মামলাকারীর বক্তব্য জানতে চাইল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। অর্ডিন্যান্স সংক্রান্ত মামলায় তিন সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে নিজেদের বক্তব্য জানাতে হবে, এদিন নির্দেশ দিল হাইকোর্ট।এর বিরুদ্ধে কোনও বক্তব্য থাকলে দু’সপ্তাহের মধ্যে জানাতে হবে মামলাকারীকে বলে আদালত জানিয়েছে । আগামী ৩১ জুলাই ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে । ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার সার্চ কমিটি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করলে মামলাকারীকে সঙ্গে সঙ্গে আদালতে তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ।মামলাকারীর আইনজীবী জানান , -‘ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগে স্বজন-পোষণের কোনও জায়গা নেই ।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে হয় । নিয়োগ সংক্রান্ত সার্চ (সিলেকশন) কমিটির সদস্যপদে রাজ্যের প্রতিনিধি বেশি রাখা হয়েছে বেআইনি ভাবে । সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের একাধিক নির্দেশ উল্লেখ করে মামলাকারীর আইনজীবী আরও জানান , -‘ কোনও রকম স্বজন-পোষণ যাতে না হয়, সেই কারণে রাজ্যের হস্তক্ষেপ মানা হয়নি । একজন নমিনি মুখ্যমন্ত্রীর, একজন উচ্চশিক্ষা দফতরের চেয়ারম্যানের নমিনি রাখাটা বেআইনি’ ।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় এদিন এজলাসে জানান , -‘যাঁরাই কমিটির সদস্য পদে থাকুন না কেন, তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অনুমতির ভিত্তিতেই মনোনীত হন ‘। পাশাপাশি রাজ্যের কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েই এখনও এই সংক্রান্ত সার্চ কমিটি তৈরি হয়নি বলে জানান তিনি । যদিও অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল অশোক চক্রবর্তী আদালত কে জানিয়েছেন , -‘ উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত বিষয় যৌথ তালিকাভুক্ত । এরফলে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষমতা কেন্দ্রের ।
কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসাবে রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতির পরামর্শের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন’ ।
প্রসঙ্গত, রাজ্য যে অর্ডিন্যান্স এনেছে তাতে সার্চ কমিটিতে পাঁচ জন সদস্য রাখা হয়েছে । তার মধ্যে একজন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধি । একজন উচ্চশিক্ষা দফতরের চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি । একজন চ্যান্সেলরের প্রতিনিধি । একজন ইউজিসি দফতরের প্রতিনিধি । মামলাকারীদের আপত্তি, কেন মুখ্যমন্ত্রী ও উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রতিনিধি রাখা হবে কমিটিতে ?রাজ্য সরকার উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত যে অর্ডিন্যান্স এনেছে, তার বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে । সেই মামলার প্রেক্ষিতেই রাজ্যকে তিন সপ্তাহের মধ্যে তাদের বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট ।শুধু তাই নয়, মামলাকারীর যদি কোনও বক্তব্য থাকে তবে সেটাও দু’সপ্তাহের মধ্যে জানতে হবে আদালতে।