নিজস্ব প্রতিনিধি: রামপুরহাটের বগটুইয়ে গণহত্যা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক যেন কিছুতেই থামছে না। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্ত চলার মাঝেই বিজেপির বিশেষ তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। আর ওই তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। বিজেপির তদন্ত রিপোর্টের পিছনে গভীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বুধবার পাহাড়ে মহাকাল মন্দিরে পুজো দেওয়ার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেই আশঙ্কার কথা প্রকাশও করেছেন তিনি। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের অভিযোগ, ‘সিবিআই তদন্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে বিজেপি। বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করতে চাইছে।’
রামপুরহাটের বগটুই গণহত্যাকে হাতিয়ার করে রাজ্যে হারানো জমি ফিরে পাওয়ার জন্য চেষ্টার কোনও কসুর রাখছে না। বগটুইয়ের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধিদলকে পাঠিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা।
ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন চার প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক সত্যপাল সিং, কেসি রামমূর্তি, ব্রিজলাল ও ভারতী ঘোষ এবং বঙ্গ বিজেপির মুখিয়া সুকান্ত মজুমদার। যে চার প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিককে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগও রয়েছে। এদিনই বিজেপির তথ্য অনুসন্ধান কমিটির পক্ষ থেকে দলের সর্বভারতীয় সভাপতির হাতে রিপোর্ট তুলে দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে যখন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই তদন্ত শুরু করেছে তখন বিজেপির পৃথক তদন্ত কমিটি গঠনের পিছনে গভীর ষড়যন্ত্রই দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন দার্জিলিংয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বকটুইয়ের তদন্তে সিবিআইকে সব রকমের সহযোগিতা করছে রাজ্য সরকার। আমরাই ভাদু শেখের খুনের ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছি। অথচ বিজেপি আলাদা করে তদন্ত শুরু করেছে এবং রিপোর্ট জমা দিয়েছে। কোনও সংস্থা স্বাধীনভাবে তদন্ত করার সময়ে অন্য কোনও রাজনৈতিক দলের তদন্তের বিষয়টি ক্ষমতার অপব্যবহার বলেই মনে করছি। সাধারণ মানুষ এতে তদন্তের উপরে আস্থা হারিয়ে ফেলতে পারে। আমার মনে হয়, বিজেপির এই তদন্ত রিপোর্ট সিবিআইয়ের তদন্তকে প্রভাবিত করবে। বিজেপির আচরণ অত্যন্ত নিন্দনীয়। ওরা কোনও তদন্ত ছাড়াই কীভাবে জেলা তৃণমূল সভাপতির নাম বলল? কী করে জানছে কে ঘটনায় জড়িত?
অন্যদিকে, কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউসের আদলে দার্জিলিংয়েও কফি হাউস গড়ে তোলারও পরিকল্পনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সফরসঙ্গীদের সঙ্গে চায়ের আড্ডা দিতে দিতেই কলকাতার এক শিল্পপতিকে ওই কফি হাউস গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি। এমনকী নয়া কফি হাউসের নামকরণও ঘোষণা করেন। নাম দিয়েছেন ‘ক্যাফে হাউস’।
দার্জিলিংয়ের রাজভবনের আশেপাশেই ওই কফি হাউস খোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কফি হাউস চালু হলে পর্যটকরা আরও বেশি করে পাহাড়ে ছুটে আসবেন বলেও আশাবাদী মুখ্যমন্ত্রী।