কৌশিক সালুই, বীরভূম :- ডেউচা পাঁচামি কয়লা শিল্পাঞ্চলের পুনর্বাসন প্রকল্পে তৃতীয়বারের জন্য পুলিশ এবং চতুর্থ শ্রেণীতে নিয়োগ পত্র তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বীরভূমের বোলপুরের ডাকবাংলো ময়দানে সরকারি পরিষেবা প্রদান মঞ্চ থেকে এই পরিষেবা তুলে দেন। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে নাবালক চাকরিপ্রার্থীদের পরিবারের হাতে সহায়ক ভাতা এবং জমির দাম এদিনের মঞ্চ থেকেও দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও মোহাম্মদ বাজারের হাবরা পাহাড়ি শুট আউট কাণ্ডে নিহত দুই পরিবারের সদস্যদের চাকরিতে নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়েছে।
এদিনের পরিষেবা প্রদান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডেউচা পাঁচামি কলা শিল্পাঞ্চলের পুনর্বাসন প্রকল্পে জমিদাতার মনোনীত পরিবারের সদস্যকে ২৪১ জনকে পুলিশে এবং একশ দশ জনকে চতুর্থ শ্রেণীর পদে নিয়োগ পত্র তুলে দেন। ১৫ টি পরিবারের মনোনীত নাবালক চাকরিপ্রার্থীকে মাসিক ১০০০০ টাকা সহায়ক ভাতা এবং পাঁচজনকে প্রকল্পের জমির মূল্যের জন্য চেক দেওয়া হয়েছে এদিন। এর আগে দুটি ধাপে ৩৫৪ জন পুলিশে এবং ১৭৪ জন চতুর্থ শ্রেণীতে নিয়োগ হয়ে কর্মরত অবস্থায় রয়েছেন জমিদাতার পরিবারের সদস্যরা। ৫৪ জন কে সহায়ক ভাতা আগেই দেওয়া হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন ডেউচা পাঁচামি কয়লা শিল্পাঞ্চল পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম কয়লা শিল্পাঞ্চল হতে চলেছে। শুধুমাত্র বীরভূম জেলা নয় আশেপাশের জেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষের মানুষের কর্মসংস্থান হবে এই প্রকল্প থেকে। আগামী একশো বছর তাপ বিদ্যুৎ শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা এই প্রকল্প থেকেই পাওয়া যাবে এর সঙ্গে বিদ্যুতের দামও কমে যাবে অনেক। সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের ৩৩৭০ একর জমির মধ্যে এক হাজার একর জমি সরকারের আছে। বাকি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি স্বেচ্ছায় দেওয়ার জন্য এলাকার মানুষজন আবেদন করেছেন। তাদের অনেকের পুনবাসন প্রকল্পে নিয়োগ দেওয়ার পাশাপাশি জমি কেনা চলছে জোর কদম। রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দল নানা মামলা মোকদ্দমা করে সরকারি চাকরি বন্ধ করে দিচ্ছে। তার মধ্যেও আমরা বেকারদের জন্য অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছি। এছাড়াও ডেউচা পাঁচামি শিল্পাঞ্চলের জন্য এলাকার মানুষজন নিঃশব্দে যেইভাবে সরকারকে সহায়তা করে চলেছে তার জন্য আমরা সেই সমস্ত জমিদাতা পরিবারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনারা এই প্রকল্পে কেউ বঞ্চিত হবেন না। চাকরি এবং জমির দামের পাশাপাশি স্কুল কলেজ হাসপাতাল বসবাসের গৃহ সবকিছু আপনাদের জন্য নির্মাণ করে দেওয়া হবে”। বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন,” এদিন থেকেই নিয়োগপত্র প্রাপকরা পুলিশ পরিবারের সদস্য হয়ে গেলেন । উপরের নির্দেশ এসে গেলে তাদেরকে খুব দ্রুত ব্যারাকপুরের স্বামী বিবেকানন্দ রাজ্য পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হবে। এছাড়াও মহৎ বাজারের হাবড়া পাহাড়ি শুট আউট কান্ডে নিহত দুই পরিবারের সদস্যদের এদিন চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে”। আলিনগরের বাসিন্দা ফিরোজ হোসেন ডেউচার বাসিন্দা মনি কবিরাজরা বলেন,” মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পে আমরা প্রথম থেকেই ছিলাম। সেই মতো আমরা স্বেচ্ছায় জমিয়ে দিয়ে দিয়েছি। এদিন আমরা নিয়োগপত্র পেয়ে খুশি হয়েছি”।