ইনামুল হক, বসিরহাট: বাদুড়িয়ার এক যুবকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হল দত্তপুকুর থানার নেতাজি পল্লীর ঝিকের মোড় এলাকা থেকে। বাদুড়িয়ার উমাপতিপুর গ্রামের সুরথ রায়(৪২) নামে ওই যুবক কলকাতায় টালিগঞ্জে চলচ্চিত্র শিল্পের যুক্ত ছিলেন। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি শর্ট ফিল্ম পরিচালনা করেছেন সুরথ।
সুরথের জামাইবাবু পেশায় শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, সম্প্রতি বারাসতের উদয় নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি ক্যামেরা কেনার জন্য প্রায় একলক্ষ টাকা দেয় সুরথ। কিন্তু তাকে ক্যামেরা দিচ্ছিলেন না ওই ব্যক্তি। সুরথের পরিবারের দাবি সুরথের পূর্ব পরিচিত উদয় পুরো টাকা শোধ হয়ে যাওয়ার পরেও তাকে ক্যামেরা দিচ্ছিল না। এরপরেই তাকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।
সুরথের বাবা প্রফুল্ল চন্দ্র রায় বলেন, সোমবার বিকেলে তাকে ক্যামেরা দেওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে যায়। এদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হয় সুরথ। সন্ধ্যে সাতটা ৪৪ মিনিটে একটি ভয়েস কলের মেসেজ আসে ছেলে সুকৃতি রায়ের ফোনে। সেখানে সুরথ জানায় আমি এখন বারাসাতে দিকে। এরপর আর কোন কথা শোনা যায়নি। রাত দশটা নাগাদ শেষবার ছেলে সুকৃতির সঙ্গে কথা হয়। কলে সুরথ জানায় তার ফিরতে দেরি হবে। সকলেই যেন খেয়ে নেয়। এরপর তাকে আর ফোনে পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই তার ফোন সুইচড অফ হয়ে যায়। হাসপাতালে সুরথের পরিবার দেহ শনাক্ত করে জানতে পারে ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে শেষে গলা কেটে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। বাবা প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ঘটনার পূর্ণ তদন্ত চেয়ে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছে। এলাকায় ভালো ছেলে হিসেবেই পরিচিত ছিলেন সুরথ এমনটাই জানিয়েছেন প্রতিবেশী উপানন্দ মন্ডল। দত্তপুকুর থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। ওইদিন রাতে ঘটনাস্থল থেকে হাতেনাতে একজনকে ধরেও ফেলে বাসিন্দারা। তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
নোওয়াপাড়া নেতাজি পল্লীর বাসিন্দা গোপাল রায় নামে এক ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে দেহটি বারাসত জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার সুরথ রায়ের খুনের ঘটনা বাদুড়িয়া থানা থেকে জানানো হয় তার পরিবারের লোকেদের। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ধৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে। এই খুনের পিছনে ক্যামেরা বেচাকেনা সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেন না অন্য কোন ঘটনা আছে পুলিশ তদন্ত করে দেখছে।