বিশেষ প্রতিবেদনঃ আমরা অবগত হয়েছি যে– আমাদের স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এখন ঘোরতর সংকটের মধ্যে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক পরিকাঠামো সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। নিরাপত্তারক্ষী থেকে সাফাইকর্মী– কারওরই পারিশ্রমিক দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না গত কয়েক মাস ধরে। ন্যূনতম পরিচালনা ব্যয় নির্বাহ করতে না পারার কারণে নষ্ট হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার সম্পত্তি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্ক সার্কাস ক্যাম্পাসে (যেখানে মূলত ভাষা ও কলা বিভাগের বিষয়গুলি পড়ানো হয়) ইন্টারনেট ব্যবস্থা অচল হয়ে রয়েছে গত এক বছর যাবৎ। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নোটিস দেওয়া হয়েছে। ইউজিসি-র ব্যবস্থাপনায় ‘ন্যাক টিম’কে দিয়ে এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যায়ন করিয়ে নেওয়া অতি জরুরি।
এ দিকে এই কাজের জন্য প্রাথমিকভাবে যে সাত লক্ষ টাকা দিয়ে আবেদন করতে হয়– সেই টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে নেই। শোনা যাচ্ছে– গত ও চলতি দুই অর্থ বৎসরে বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্নয়নবাবদ কোনও অর্থ দেওয়া হয়নি। দেওয়া হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালনা ব্যয়বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ। এতে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চরম সংকট তৈরি হয়েছে। পাওনাদারদের প্রাপ্য অর্থ পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। এতে পাওনাদাররা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন– নষ্ট হচ্ছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও সম্মান। সবথেকে আশ্চর্যের কথা– যাদের কোনও এক্তিয়ার-ই নেই– প্রভাবশালী সেই ব্যক্তিরা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে পদত্যাগ করার জন্য আদেশ দিচ্ছেন– হুমকি দিচ্ছেন!
আমরা এও অবগত হয়েছি যে– রাজ্যের সরকারি বাজেটে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও দৈনন্দিন পরিচালন ব্যয় বাবদ গত অর্থবর্ষে (২০২০-২১) এক শত বারো কোটি এবং বর্তমান অর্থবর্ষে (২০২১-২২) এক শত পনেরো কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এ দিকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে বলা হয়েছে– এই বিপুল পরিমাণ অর্থের অতি সামান্য অংশও বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে এসে পৌঁছয়নি। প্রাপ্য টাকার জন্য আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় বারবার সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু দফতরের আধিকারিক ও কর্তা-ব্যক্তিরা সে আবেদনে কর্ণপাত করেননি।
উল্লেখ্য– বাংলার বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পরিচালনা করে উচ্চশিক্ষা দফতর। শুধুমাত্র সুপ্রাচীন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য– মর্যাদা এবং বাংলার সংখ্যালঘুদের মনোভাবের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বরাদ্দ– পরিচালন ভারের একটা বড় অংশ দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের হাতে।
আমরা এ কথা জেনে রীতিমতো বিস্মিত ও রক্তাক্ত হচ্ছি যে– ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে নিয়ম মেনে বিশ্ববিদ্যালয় যেসব জিনিস ক্রয় করেছিল অদ্যাবধি তার বিল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি সংখ্যালঘু ও মাদ্রাসা দফতরের আধিকারিকদের চরম অসহযোগিতার কারণে।
সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে ৮ এপ্রিল ২০২০ তারিখে সরকারি কোষাগারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ফেরত দেওয়া হয়েছিল ৫২ কোটি ৯৮ লক্ষ ৩১ হাজার ৮২ টাকা। অর্থ দফতরের নিয়ম অনুসারে ফেরত দেওয়া এই টাকার মধ্যে যে টাকার পার্চেজ অর্ডার ৩১ মার্চ ২০২০-র আগে দেওয়া হয়েছে সেই টাকা অনতিবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ফেরত আসার কথা। তখন প্রথমে দফতরের পক্ষ থেকে তা অতি দ্রুত অর্থ ফেরত দেওয়ার কথা বলাও হয়েছিল। অথচ আজ (২৭ আগস্ট– ২০২১) অবধি ওই টাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ফিরিয়ে দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য– ওই টাকা ফেরত চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে ৪ মে ২০২০– ১৩ মে ২০২০– ৩০ মে ২০২০– ৮ জুলাই ২০২০– ১৪ জুলাই ২০২০ ইত্যাদি নানা সময়ে। বকেয়া এই টাকা না পাওয়ার কারণেই মুখ্যত পাওনারদের কাছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান নষ্ট হয়েছে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান নষ্ট হওয়া নয়– এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তৈরি হয়েছে ঘোরতর সামাজিক এবং শিক্ষা সংকটও। আমরা জানতে পেরেছি– টাকা আদায় করতে না পারায় বিভিন্ন কোম্পানি তাদের সেইসব কর্মচারীকে চাকরি থেকে বিতাড়িত করেছে যারা তাদের কোম্পানির হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা জিনিস সরল বিশ্বাসে ইন গুড ফেইথ সরবরাহ করেছিলেন। এই কর্মহীনতার বাজারে এভাবে আলাদা করে কারও কর্মচ্যুতি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং যারা এই অবস্থা সৃষ্টির জন্য দায়ী– তারা শাস্তিযোগ্য।
উল্লেখ্য– দৈনন্দিন পরিচালনা ব্যয় বাবদ ১৩ মে ২০২০ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মাত্র ১২ কোটি টাকা চেয়ে দফতরের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সামান্য অর্থও বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়া হয়নি। যদিও ২০২০-২১ অর্থবর্ষে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেতে ১১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে যেখানে উন্নয়ন ও দৈনন্দিন পরিচালনা বাবদ ১১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে সেখানে অদ্যাবধি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে কোনও টাকাই দেওয়া হয়নি। বিশ্বস্ত সূত্রে এসব অবাক করা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
১১ জুন ২০২১– আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চলতি অর্থবর্ষের প্রথম পর্ব হিসাবে ২৯ কোটি ২৮ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা চেয়ে আবেদন করেছেন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে এখনও পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি টাকাও দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল সম্পূর্ণ শূন্যতে পরিণত হয়েছে।
পরিস্থিতিতে নজর দিয়ে আমরা শুধু বিস্মিত নয়– সম্পূর্ণ হতবাক হয়ে পড়েছি। এটা কীভাবে সম্ভব। রাজ্য সরকার যেখানে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য শত কোটি হাতে নিয়ে অপেক্ষা করছেন– সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল সম্পূর্ণ শূন্যতে নেমে এসেছে কীভাবে? রক্ষণাবেক্ষণ করা যাচ্ছে না বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তির– সামান্যতম পারিশ্রমিকে যারা নিরাপত্তা ও সাফাইকর্মী হিসাবে কাজ করেন মাসের পর মাস তাদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না প্রাপ্য পারিশ্রমিক। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল সম্পূর্ণ শূন্যতে পরিণত হয়েছে– এটা অবিশ্বাস্য কিন্তু আলিয়ার ক্ষেত্রে বাস্তব। বিশ্ববিদ্যালয়টি আলিয়া বলেই কী এমন অবাস্তব বিষয়ও বাস্তব রূপ নিল!
হায়– সামাজিক অগ্রগতির প্রশ্নে চূড়ান্তভাবে পিছিয়েপড়া পশ্চিমবঙ্গের তথা পূর্ব ভারতের সংখ্যালঘু সমাজের সর্বাঙ্গীন বিকাশের লক্ষ্যে গড়ে তোলা আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই দুরবস্থা। বিশেষত– আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী যেখানে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তাঁর উদার হৃদয় ও মুক্ত হস্ত সদা প্রসারিত করে রয়েছেন।
আমরা জানতে চাই– আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে এই যে অচলবস্থা তৈরি হয়েছে– এর দায় কার? এক্ষেত্রে যে বা যারাই দায়ী হন না কেন– আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। সেইসঙ্গে আরও দাবি করছি যে– কার্যকারণ সম্পর্কের অনুসন্ধান ও তার পর্যালোচনা যখন হওয়ার তখন হবে– আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবমতো প্রয়োজনীয় অর্থ এখনই বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হোক। এর ব্যতিক্রম হলে কোভিড পরিস্থিতি সত্ত্বেও বাংলার সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রী– শিক্ষক– অভিভাবক ও সমাজের শুভ চিন্তকরা পথে নামতে বাধ্য হবে। এ প্রসঙ্গে জোরের সঙ্গে বলা প্রয়োজন– সেই ব্রিটিশ আমলে ১৭৮০ সালে বাংলার মুসলমানদের জন্য মাদ্রাসা-ই-আলিয়া প্রতিষ্ঠা করতে বহু বিশিষ্ট ব্যক্তির অবদান রয়েছে। পলাশির যুদ্ধের পর সেই প্রথম বাংলার মুসলমানরা শিক্ষায় উঠে দাঁড়াবার জন্য চেষ্টা শুরু করেন। স্যার সৈয়দ আমীর আলি এবং নওয়াব আবদুল লতিফ কলকাতারই এই মাদ্রাসার দুই কৃতিমান ছাত্র। তাঁরাও পরবর্তীতে আলিয়ার উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখেন। স্বাধীনতার পর বাম আমলে মাদ্রাসা আলিয়াকে বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য যারা আন্দোলন করেন– পুলিশের লাঠির সম্মুখীন হন– তাঁদের নামও হয়তো আলিয়ার উন্নয়নে বাধাদানকারী আধিকারিকরা শোনেনই। আর এই আন্দোলনকে স্বীকৃতি দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের স্বপ্নের চারণভূমি। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছে আমাদের এবং আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। নিজস্ব জেদ বজায় রাখতে গিয়ে এমন প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিসাধন যে বা যাঁরাই করতে চান– বাংলার সংখ্যালঘুরা তাঁদের ক্ষমা করতে পারবে না। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনওরকম অসম্মানও আমরা মেনে নেব না। আমরা জেনেছি যে– সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে তদন্ত ও পরিদর্শন করা হচ্ছে। আমরা এই পদক্ষেপকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করি। আমরা বিশ্বাস করি– এতে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষিত হবে।
তবে এই প্রেক্ষিতে আমাদের বিশেষ কিছু কথা বলার আছে। পরিদর্শন ও তদন্ত কমিটির সদস্য হিসাবে যাদের মনোনীত করা হয়েছে– তাঁদের মধ্যে কারোরই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো বা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক হিসাবে কাজ করার ন্যূনতম অভিজ্ঞতা নেই। সকলেই সরকারি আধিকারিক। বিষয়টা অস্বস্তিকর ও রীতিমতো অসম্মানজনক। সাধারণভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গঠিত তদন্ত কমিটির শীর্ষে থাকেন একজন প্রাক্তন উপাচার্য বা প্রাক্তন বিচারপতি– অন্ততপক্ষে একজন বর্ষীয়ান অধ্যাপক। এক্ষেত্রে তার সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম হয়েছে। আমরা বুঝতে পারছি না– এটা কেন হল– কীভাবে হল! কেন এই কমিটিতে এমন কাউকে রাখা হল না– যিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন ব্যবস্থা ও পঠন-পাঠন পদ্ধতি বিষয়ে বিশেষভাবে অবগত। আমরা মনে করি– যেভাবে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে– তা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে অসম্মানজনক এবং আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। আমরা লোক মুখে শুনেছি– তদন্ত কমিটির সদস্য হিসাবে যাদের মনোনীত করা হয়েছে তাদের নামেও নানা অভিযোগ রয়েছে। এইসব অভিযোগের সামান্যও যদি সত্য হয়– তবে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য– সেইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সমাজের কাছে এর থেকে অসম্মানজনক আর কিছু হয় না।
আমরা জেনে বিস্মিত হয়েছি যে– যে কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিদর্শন ও তদন্তের কাজ করছেন তাঁদের কাছে কোনও নির্দিষ্ট রোড ম্যাপ নেই। তাঁরা প্রতিদিন এক একটি নতুন তালিকা দিচ্ছেন এবং সেই অনুসারে তথ্য দাবি করছেন। এটা রীতিমতো অস্বাস্থ্যকর। এমন ঘটনা– হয় কর্মদক্ষতার অভাবকে প্রতিপন্ন করে– অন্যথায় কোনও অসৎ উদ্দেশ্যের ইঙ্গিতবাহী বলে মনে হয়। আমরা যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোনও স্তরের পরিদর্শন বা তদন্তকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করি– তেমনি তীব্র ভাবে নিন্দা করি এমন অশুভ প্রয়াসকে। তদন্ত করা হচ্ছে– অথচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অদ্যাবধি জানানো হয়নি– তাঁদের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ রয়েছে এবং অভিযোগকারী কে বা কারা। আমরা দাবি করছি– অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়কে লিখিতভাবে জানানো হোক– বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ আছে এবং কারা এই সব অভিযোগ করেছেন। যতক্ষণ তা জানানো না হচ্ছে– ততক্ষণ আমরা পরিদর্শন বা তদন্তকার্য স্থগিত রাখার দাবি জানাচ্ছি। আমরা আরও দাবি করছি– কাদের জন্য এবং কী কারণে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে– তারও তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
আমরা দাবি করছি– নিরপেক্ষ তদন্ত হোক– তদন্তের ভিত্তিতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক অপরাধীকে– তিনি এমএএমই-র আধিকারিক বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যেই হোন না কেন। আমরা বিশ্বাস করি– আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে যে সংকট তৈরি হয়েছে তা নিরসনের দায় আমাদের সকলের। তবে বিশেষ করে এর দায় বর্তায় সংখালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের উপর। এরা কাজ করেন সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষামন্ত্রীর অধীনে। তিনিই এক্ষেত্রে সাংবিধানিক ন্যায়ভার বহন করছেন। এই প্রেক্ষিতে সমস্যা নিরসনের জন্য– মহাশয় আমরা আপনার দ্রুত ও অতি দৃঢ় পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছি। এ বিষয়ে আপনার দিক থেকে কোনওরকম শিথিলতা প্রদর্শন সাংবিধানিক ন্যায়ের পরিপন্থী ও সুস্থচেতনা বিকাশের পথে প্রতিবন্ধকতা স্বরূপ। আপনার অনুগ্রহের প্রত্যাশায় থাকলাম। আপনাকে ধন্যবাদ।