পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: দেশের একের পর এক এলাকা হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে আফগান সরকারের। সশস্ত্র রাজনৈতিক দল তালিবান বিগত কয়েক সপ্তাহে দেশটির ৪০টিরও বেশি জেলা দখল করে নিয়েছে। এমতাবস্থায় আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ঠিকই কিন্তু তালিবান আফগান শান্তি আলোচনার ব্যাপারে নিজেদের অঙ্গীকারকে পুনর্ব্যক্ত করেছে। একইসঙ্গে দলটি বলেছে, তারা আফগানিস্তানে প্রকৃত ইসলামি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেখানে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং ধর্মীয় বিধানের আলোকে মহিলাদের তাদের প্রাপ্য অধিকার দেওয়া হবে।কাতারে আফগান সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তালিবানের আলোচনা বেশ ধীর গতিতে অগ্রসর হচ্ছে। অন্যদিকে ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের আগে দেশজুড়ে সংঘর্ষের ঘটনা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতেই রবিবার তালিবানের তরফ থেকে এই বিবৃতি এল। আফগান কর্মকর্তারা এরই মধ্যে বিদ্যমান আলোচনা নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। তারা বলছেন, তালিবান এখনও লিখিত শান্তি প্রস্তাব জমা দেয়নি, যা মূল আলোচনার সূচনা হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
এদিকে তালিবানের রাজনৈতিক অফিসের প্রধান মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদার এক বিবৃতিতে বলেন, ’আমরা এটা বুঝতে পারছি যে, বিদেশি সেনা প্রত্যাহারের পর প্রতিষ্ঠিত হতে চলা শাসন ব্যবস্থাটির ধরন সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এবং আফগানদের মনে প্রশ্ন রয়েছে।’ মোল্লা আবদুল ঘানি বারাদার আরও বলেন, ‘আফগানদের যাবতীয় সমস্যার সর্বোত্তম সমাধান হল একটি প্রকৃত ইসলামি ব্যবস্থা।’ তাঁর কথায়, ’আলোচনায় আমাদের অংশগ্রহণ এবং সেখানে আমাদের পক্ষে যে সমর্থন এসেছে সেটি স্পষ্টতই এই ইঙ্গিত দেয় যে আমরা পারস্পরিক বোঝাপড়ায় বিশ্বাসী।’
এদিকে ১১ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তান থেকে মার্কিন ও ন্যাটো সেনাবাহিনী চলে যাওয়ার পর কাবুলের পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে সেটি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে বিমানবন্দর ও বিদেশি দূতাবাসগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। এরইমধ্যে অস্ট্রেলিয়া কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যদিকে কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছে তুরস্ক। এ ব্যাপারে আমেরিকারও সায় আছে বলে জানা গেছে। তবে এক বিবৃতিতে তালিবান তুরস্কের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। তারা বলেছে, মার্কিন ও ন্যাটো বাহিনী প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানে সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখার ‘কোনও আশা’ রাখা উচিত নয়। দূতাবাস ও বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আফগানদেরই দায়িত্ব।
তালিবানের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ’আফগানিস্তানের প্রতি ইঞ্চি জমি, এর বিমানবন্দর, বিদেশি দূতাবাস এবং কূটনৈতিক অফিসগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আফগানদের দায়িত্ব। ফলে আমাদের দেশে সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখার আশা কারও পোষণ করা উচিত নয়। যদি কেউ এ জাতীয় ভুল করে থাকে তবে আফগান জনগণ এবং ইসলামি শাসনব্যবস্থা তাদের দখলদার হিসেবে বিবেচনা করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবে।’