আগ্রা, ৪ ফেব্রুয়ারি: প্রতি বছর ৬-৮ ফেব্রুয়ারি শাহজাহানের উরস পালিত হয় তাজমহলে। মুঘল সম্রাট শাহজাহানের মৃত্যুদিবস পালন উপলক্ষ্যে এই উরস অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় প্রতিবছর। চলতি বছরে মুঘল সম্রাটের ৩৬৯তম উরস পালিত হবে। কিন্তু, তার তিনদিন আগে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আগ্রা সিভিল কোর্টে একটি পিটিশন দাখিল করেছে। সেখানে তারা এই উরসের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি জানিয়েছে। একইসঙ্গে এই উরসকে কেন্দ্র করে অনেক মানুষ যেভাবে তাজমহলে জমায়েত করে তারও তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে। অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা নামে ওই হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি এই পিটিশন দাখিল করেছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছে। ৪ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে।
সংগঠনটির মুখপাত্র সঞ্জয় জাট তথ্য জানার অধিকার আইনে এএসআইয়ের থেকে তথ্য চেয়েছিলেন যে, শাহজাহানের উরস পালন করার জন্য পরবর্তী মুঘল সম্রাটরা বা ব্রিটিশ সরকার বা ভারত সরকারের তরফে কোনও অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কিনা। উত্তরে এএসআই জানায়, এই ধরনের কোনও অনুমতি উরস আয়োজক কমিটিকে দেওয়া হয়নি। আর এরপরই অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার পক্ষ থেকে আদালতে আবেদন জানানো হয় এই উরস বন্ধ করার জন্য। এই প্রসঙ্গে হিন্দু মহাসভার সভাপতি মীনা দিবাকর ও জেলা সভাপতি সৌরভ শর্মা জানান, এএসআই-এর সৌধগুলিতে যখন কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করা যায় না, তখন তাজমহলে এই ধরনের উরস অনুষ্ঠান ‘বেআইনি’। তাঁরা আরও জানান, শীঘ্রই তাঁরা তাজমহল চত্বরে একটি সার্ভের জন্য পিটিশন দাখিল করার কথা ভাবছেন, যেমনটা জ্ঞানভাপী ও মথুরা মসজিদে করা হয়েছে।
যদিও এই প্রসঙ্গে উরস আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দ ইব্রাহিম জাইদি বলেন, কয়েক শতক ধরে মুঘল সম্রাট শাহজাহানের উরস অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতিবছর এএসআই এই অনুমতি দিয়ে আসছে। চলতি বছরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তাঁর আরও দাবি, এই ক’দিন আগেও এএসআই অফিসে একটি বৈঠক হয়েছিল। কীভাবে উরস পালিত হবে তা নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়। উল্লেখ্য, উরস উপলক্ষ্যে প্রতি বছর এই তিনদিন তাজমহলে বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ মেলে। যদিও জানা গিয়েছে, হিন্দু মহাসভা মামলা করলেও এবার শাহজাহানের উরস পালনে কোনও বাধা দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিবছর যেভাবে এখানে উরস পালিত হয়, চলতি বছরেও ৬-৮ ফেব্রুয়ারি সেভাবেই উরস পালিত হবে।