পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: রামসেতুকে ন্যাশনাল হেরিটেজ (জাতীয় ঔতিহ্য) মর্যাদা দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে লিখিত জবাব দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে আরও সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট।
বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালত রামসেতুকে জাতীয় ঐতিহ্যের স্মৃতিস্তম্ভ হিসেবে ঘোষণা করার দাবিতে দাখিল হওয়া পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে লিখিত প্রতিক্রিয়া জমা দেওয়ার জন্য আরও সময় দিয়েছে কেন্দ্রকে।
পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র কেন অহেতুক বিলম্ব করছে তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। এ দিন আদালতে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফের আইনজীবী রামসেতু নিয়ে লিখিত জবাব দেওয়া নিয়ে আরও সময় চাইলে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ রীতিমতো কড়া ভাষায় তাঁকে বলে, ‘কেন নিজেই নিজের পা ধরে টানছেন?’ অর্থাৎ, প্রধান বিচারপতি বোঝাতে চেয়েছেন, কেউ নিজেই নিজের পা ধরে টানলে তারপক্ষে এক পা-ও এগোনো সম্ভব নয়। এ ক্ষেত্রেও কেন্দ্র সেটাই করছে। সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনার মুখে পড়ে কেন্দ্রের আইনজীবী পালটা বলেন, জবাবি হলফনামা সম্পূর্ণ প্রস্তুত। শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের থেকে অনুমোদন নেওয়া বাকি।
রাজ্যসভার সাংসদ তথা প্রবীণ বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী সুপ্রিম কোর্টে এই পিটিশনটি দাখিল করেছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চকে তিনি বলেন, অতীতে এই নিয়ে একাধিকবার নির্দেশ সত্ত্বেও কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত একটিও হলফনামা জমা দিতে পারল না।
সুব্রহ্মণ্যম আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিষয়টি নিয়ে মামলা চলছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত এই ইস্যুতে কোনও নির্দিষ্ট অবস্থান নিচ্ছে না। কেন্দ্রকে ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ বলতে হবে,তারা রামসেতুকে ন্যাশনাল হেরিটেজ মর্যাদা দিতে চায় কি না। আসলে প্রথম ইউপিএ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় তাদের ‘সেতুসমুদ্রম ক্যানেল’ প্রকল্পের বিরুদ্ধে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন সুব্রহ্মণ্যম।
২০০৫ সালে প্রথম ইউপিএ সরকারের আমলে বঙ্গোপসাগর থেকে আরব সাগরে জলপথ পরিবহণ ব্যবস্থা সুগম করতে পক-প্রণালী বা তথাকথিত রামসেতুর মধ্যবর্তী স্থানের নাব্যতা বাড়ানোর জন্য একটি জলপথ প্রকল্প তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিল।
গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ ছিল, এই প্রকল্প আসলে ‘রামসেতু’কে ধ্বংসের অপচেষ্টা। সেতুসমুদ্রম প্রকল্পের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন সুব্রহ্মণ্যম। পালটা হলফনামা দিয়ে তৎকালীন ইউপিএ সরকার জানিয়ে দেয়, এই প্রকল্পটি কার্যকরী হলে ভারতের পূর্ব ও পশ্চিম উপকূলের মধ্যে জাহাজ চলাচলে যেমন সময় কম লাগবে তেমনই তেলের খরচও কমবে। এরপর এনডিএ সরকার কেন্দ্রের ক্ষমতায় আসলে তারা এই প্রকল্পের কাজ স্থগিত রেখে দেয়।