শুভজিৎ দেবনাথ, ডুয়ার্স: দীর্ঘ কয়েক বছরের টালবাহানা কাটিয়ে জমে উঠেছিল চলতি বছরের দুর্গাপুজো। আর সে উপলক্ষে মানুষের উন্মাদনাও ছিল চোখে পড়ার মতো। সেইমতো পুজো শুরু থেকে শেষ অধি সব বাঙালি পুজোপ্রেমি মানুষ স্রোতে গা ভাসিয়েছে বলা যায়। কিন্তু এই আন¨ই যে দুঃখে পরিণত হবে তা কেউ জানতো না। জলপাইগুড়ি জেলার মাল নদীর প্রতিমা বির্সজনের ঘটনায় হরপা বানে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হল ৮ যাত্রীর। প্রশাসন সূত্রে খবর নিখোঁজ এখনও বহু। এছাড়াও ১৩ জন মাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ, দমকলকর্মী, সিভিল, ডিফেন্স কর্মীদের তৎপরতায় প্রায় ২০০ জনের মতো উদ্ধার হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
বুধবার সন্ধ্যায় ডুয়ার্সের মালবাজার শহরের মালনদীর প্রতিমা নিরঞ্জন ঘাটে ঘটে যাওয়া বিপর্যয়ের ফলে শোকস্তব্ধ মালবাজার শহর। কার্যত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বন্ধের চেহারা নেয় এলাকা চত্বর। প্রতিমা নিরঞ্জনের জন্য নদীর গতিপথ ঘুরিয়ে বিসর্জন ঘাট সাজিয়ে তুলেছিল মাল ™ুরসভা। দশমীর বিকাল থেকেই জমে উঠেছিল নিরঞ্জন ঘাট। শুরু হয় প্রতিমা ভাসানো। রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাভাবিক নিয়মে বিসর্জন হয়। এদিন বিসর্জন ঘিরে পুলিশি তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। আচমকা রাত ৮.৩০ নাগাদ মাল নদীতে হড়কা বান দেখা দেওয়ায় বহু মানুষ তলিয়ে যায়। রাত পর্যন্ত উদ্ধারকারী দল ৮ মৃতদেহ ও ১৩ জন জখমকে উদ্ধার করে। জখমদের মাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব¨্যােপাধ্যায় মৃতদের পরিবারের জন্য ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের জন্য ৫০ হাজার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলা। তিনি বলেন, ‘আমরা মৃত ও আহত পরিবারের পাশে থাকব। তবে পুলিশ প্রশাসন এই দায় অস্বীকার করতে পারেনা। তাদের আরও সতর্ক ও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত ছিল।’
অপরদিকে, সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পার্থ দাস বলেন, বিসর্জন উপলক্ষে নদীতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ ছিল।
অন্যদিকে, স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণীর কল্যাণ ও আদিবাসী উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী বুলু চিকবরাইক বলেন, এটা কার্যত প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এখন আমাদের সবার উচিত দুর্গত পরিবারের পাশে থাকা। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উদ্ধারকাজ জারি রয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রতিমা বিসর্জন করতে আসা প্রতিমা ভo জানান, সবাই আনন্দে মেতে ছিল। আচমকা চোখের নিমেষে সব যেন তছনছ হয়ে গেল।