নিজস্ব প্রতিবেদক: বাঙালির আবেগে সুড়সুড়ি দিতে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিন পালনে এবার কোমর কষে ঝাঁপিয়েছে আরএসএস। আগামী ২৩ জানুয়ারি কলকাতার শহিদ মিনার ময়দানে ‘নেতাজি লহ প্রণাম’ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে বুধবার শহরে পা রেখেছেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। আর আরএসএসের এমন অতি ভক্তি নিয়ে মুখ খুলেছেন নেতাজি কন্যা অনিতা বসু পাফ। বৃহস্পতিবার স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, ‘নেতাজির সঙ্গে আরএসএসের চিন্তাধারার কোনও মিল নেই। সুভাষ বসু ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী ছিলেন। সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে চলতেন। আরএসএসের অন্যতম সমালোচক ছিলেন।’ নেতাজি কন্যার এমন মন্তব্যে যথেষ্টই বিব্রত অবস্থায় পড়েছেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব।
যদিও আরএসএসের ক্ষেত্রীয় প্রচারক অজয় নন্দী নেতাজি কন্যার দাবি মানতে চাননি। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘কংগ্রেসে থাকার সময়ে সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা কেশব হেডগেওয়ারের সঙ্গে নেতাজির বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল। কলকাতাতেই সুভাষ বসুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠাতা। দুজনেই স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন। একজন আজাদ হিন্দ ফৌজ তৈরি করেছিলেন আর একজন সঙ্ঘ তৈরি করেছিলেন। নেতাজি আরএসএসের সমালোচক ছিলেন, এমন কোনও প্রমাণ নেই।’ শুধু চলতি বছরেই নয়, আরএসএসের পক্ষ থেকে প্রতি বছরই নেতাজির জন্মতিথি উদযাপন করা হয় বলেও দাবি করেছেন অজয় নন্দী।
চলতি বছরে আরএসএসের নেতাজি ভজনার পিছনে লোকসভা ভোটে বাঙালি ভোটারদের পদ্ম শিবিরমুখী করার কৌশল দেখছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাঁদের মতে, আগামী বছর লোকসভা ভোটে রাজ্য থেকে যাতে বেশি আসন পাওয়া যায় তার জন্যই বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তানকে নিয়ে মাতামাতি শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। এদিন নেতাজি কন্যা অনিতা বসু পাফ তাঁর বাবাকে নিয়ে সঙ্ঘের অতি ভক্তি নিয়ে বলেছেন, ‘বাবা ধর্মনিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করতেন। হিন্দু হলেও সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে চলা পছন্দ করতেন। আরএসএসের বিচারধারা সম্পূর্ণ আলাদা। ধর্মনিরপেক্ষতায় সঙ্ঘের বিশ্বাস আছে বলে মনে করি না। আরএসএস হিন্দু রাষ্ট্রের কথা বলে, যাতে কোনও বিশ্বাসই ছিল না বাবার। শুধু জন্মদিন পালন করেই নেতাজিকে সম্মান জানানো যায় না। যদি সত্যিই আরএসএস বাবাকে সম্মান জানাতে চায় তাহলে তাঁর চিন্তাধারার প্রচার করুক। সেক্ষেরে সহায়তা করব। কিন্তু নিজেদের স্বার্থে যদি ব্যবহার করতে চায়, তাহলে অবশ্যই বিরোধিতা করব।