পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: অগ্নিগর্ভ শ্রীলঙ্কা। সরকার বিরোধী সংহিস আন্দোলনে উত্তপ্ত দেশ। বাড়ানোর হল কারফিউয়ের সময়সীমা। বুধবার সকাল ৭টা পর্যন্ত কারফিউ চলবে। আজ স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় জননিরাপত্তা অর্ডিন্যান্সের ১৬ ধারা মেনে জারি করা কারফিউ তুলে নেওয়ার কথা ছিল। পরিস্থিতি বুঝে বাড়ানো হল কারফিউয়ের সময়। কারফিউ চলাকালে কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবেন না। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বের হওয়া যাবে।
শ্রীলঙ্কায় বেড়াতে আসা বিদেশিদের ট্রাভেল ডকুমেন্টকে তাদের কারফিউ পাস হিসেবে গণ্য করা হবে বলে জানিয়েছে দেশটির পর্যটন বিভাগ।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের পরেও বিক্ষোভ কমেনি। দেশের এই পরিস্থিতির নৈতিক দায় কাঁধে নিয়ে পদ থেকে সরে দাঁড়ান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাক্ষে। এপ্রিল মাসের শুরুতেই শ্রীলঙ্কার পুরো মন্ত্রিসভা একসঙ্গে পদত্যাগ করে। ৩ মে রবিবার রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপক্ষে ও তাঁর বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ছাড়া মন্ত্রিসভার ২৬ জন মন্ত্রী একযোগে পদত্যাগ করে।
শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৫ জন নিহত হওয়ার খাবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক মানুষ। এছাড়া মাহিন্দা রাজাপাক্ষে সহ দেশটির মন্ত্রী, এমপি, সাবেক মন্ত্রী ও স্থানীয় নেতাদের বাসভবনে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। নিহতদের মধ্যে ক্ষমতাসীন এক এমপি ও এক বিক্ষোভকারীও রয়েছেন। এছাড়া আহতদের দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল শ্রীলঙ্কার পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের মা-বাবার স্মরণে তৈরি স্মৃতিস্তম্ভ গুঁড়িয়ে দিয়েছেন সরকারবিরোধীরা। দেশটির এক আইনপ্রণেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রীর বাড়িতেও আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা।
প্রসঙ্গত, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির কারণে শ্রীলঙ্কা ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে। জ্বালানি, খাদ্য ও ওষুধের মতো প্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহে চরম ঘাটতি দেখা দিয়েছে। সরকার ও আইন প্রণেতাদের জরুরি সমাধান খোঁজার আহ্বান জানিয়ে কয়েক দিন ধরে দেশব্যাপী বিক্ষোভ চলছে। শ্রীলঙ্কায় গত ২০ বছরের বেশিরভাগ সময়ই প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই আধিপত্য বিস্তার করেছে রাজাপাকসে পরিবার। বিক্ষোভকারীরা এই সংকটময় পরিস্থিতির জন্য রাজাপাক্ষের পরিবারকেই দায়ী করেছেন।