পুবের কলম প্রতিবেদক: বিক্ষিপ্ত অশান্তির মধ্যে দিয়ে সম্পূর্ণ হয়েছে পঞ্চম দফার নির্বাচন। এবছরের লোকসভা নির্বাচনে কমিশনের সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ সুষ্ঠু ও অবাধভাবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচন পর্বে বেশ কয়েকটি জায়গায় অশান্তির কথা মাথায় রেখে ষষ্ঠ দফার ভোটে রেকর্ড সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে। দেশের মোট ৫৪৩টি কেন্দ্রে ৭ দফায় এবারের নির্বাচন। পশ্চিমবঙ্গেও সাত দফায় নির্বাচন হবে। প্রথম দফায় ৩, দ্বিতীয় দফায় ৪, চতুর্থ দফায় ৮, পঞ্চম দফায় ৭, ষষ্ঠ দফায় ৮, সপ্তম দফায় ৯টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। এই পর্বে ভোট হতে চলেছে দেশের ৭ টি রাজ্য এবং ১টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ৫৮ টি কেন্দ্রে। পশ্চিমবঙ্গেও ৮ টি কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে এই দফায়।
শনিবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার এবং দুই নির্বাচন কমিশনার সংবাদ সম্মেলন করেন। বিজ্ঞান ভবনে সাংবাদিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার জানান, নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুত। এবারের নির্বাচনে ৯৭ কোটি ভোটার ভোট দেবেন। ১০.৫ লক্ষ ভোট কেন্দ্র থাকবে। দেশজুড়ে ৫৫ লক্ষ ইভিএম ব্যবহার করা হবে। দেড়কোটি ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছে।
এই দফার ভোটে ভাগ্য নির্ধারণ হবে মোট ৮৮৯ জন প্রার্থীর। অনন্তনাগ-রাজৌরি লোকসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ হওয়ার কথা ছিল গত চতুর্থ দফায়। তবে তা পিছিয়ে ২৫ মে করা হয়। কেবলমাত্র এই কেন্দ্র থেকেই ২০ জন প্রার্থী ভোটে লড়ছেন। ভোট হবে বিহার, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, উত্তর প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি। হেভিওয়েট প্রার্থীরা হলেন, নর্থ ইস্ট দিল্লি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন মনোজ তিওয়ারি এবং কানহাইয়া কুমার, পুরী লোকসভা কেন্দ্র থেকে ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন সম্বিত পাত্র, বাংলার ঘাটাল থেকে লড়াই করবেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী দেব, প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির হিরণ। তমলুকে থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রাক্তন বিচারপতি, বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এছাড়াও মেদিনীপুরে অভিনেত্রী জুন মালিয়া বনাম ফ্যাশন ডিজাইনার অগ্নিমিত্রা পলের লড়াই হবে। কাঁথির বিজেপি প্রার্থী সৌমেন্দু অধিকারীও এই দফার অন্যতম হেভিওয়েট প্রার্থী।
ষষ্ঠ দফার ভোটে নজর থাকবে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ও তমলুক আসনটিতে। বাকি ছয়টি আসন হল পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল ও মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর, ঝাড়গ্রাম ও পুরুলিয়া।
কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ষষ্ঠ পর্বের ভোটে মোট বুথের সংখ্যার ৩৮০৪টি। রাজ্যের এই আট কেন্দ্রে মোতায়েন করা হয়েছে মোট ৯১৯ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং ২৯,৪৬৮ রাজ্য পুলিশ। ৯১৯ কোম্পানির মধ্যে সর্বোচ্চ ২৩৭ কোম্পানি মোতায়েন করা হচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের দুটি আসনে। আবার এই দুই কেন্দ্রে রাজ্যূ পুলিশের সংখ্যাো মাত্র ৭১৪ জন। যা আট কেন্দ্রের মধ্যে সবচেয়ে কম। বাকি ছয় কেন্দ্রের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্যে পুলিশের অনুপাত প্রায় একই থাকছে।
যেমন বাঁকুড়া জেলার দুই কেন্দ্রে মোতায়েন করা হচ্ছে ১৭৮ কোম্পানী কেন্দ্রীয় বাহিনী ও ৬৫২১ জন রাজ্য১ পুলিশ। জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে ১৩৩ কোম্পানি বাহিনীর পাশাপাশি ২৪৩৬ জন রাজ্য পুলিশ মোতায়েন রাখা হচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটল ও মেদিনীপুর কেন্দ্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে ২১৮ কোম্পানি, রাজ্য পুলিশ ৬,৯০১ জন। পূর্ব বর্ধমান জেলায় ১৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর পাশাপাশি ৭,৪৩২ জন রাজ্য পুলিশ রাখা হচ্ছে। পুরুলিয়া কেন্দ্রে ১৩৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে মোতায়েন থাকছেন ৫,৪৬৪ জন রাজ্য পুলিশ কর্মী।