পুবের কলম প্রতিবেদক: সাইক্লোন সিত্রাংয়ের অভিমুখ ঘুরে গেলেও এ রাজ্যের কিছু জেলায় তার প্রভাব পড়তে চলেছে। আর তার জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, তা নিয়ে শুক্রবার জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যসচিব। বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের ২০টি দফতরের সচিব এবং দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির জেলাশাসকরা। আর এবার সাইক্লোন সামলাতেই রাজ্যের ছটি জেলাতে ছয় সচিবকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হল।
নবান্ন সূত্রে খবর, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় বন ও প্রাণিসম্পদ দফতরের সচিব বিবেক কুমার, উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় স্কুল শিক্ষা দফতরের সচিব মনীশ জৈন, হাওড়া জেলায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প দফতরের সচিব রাজেশ পান্ডে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সচিব সুরেন্দ্র গুপ্ত, হুগলি জেলায় মৎস্য দফতরের সচিব অবনীন্দ্র সিং ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় পর্যটন দফতরের সচিব সৌমিত্র মোহনকে দেওয়া হয়েছে দায়িত্ব।
মূলত জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে এই সচিবরা সাইক্লোন মোকাবিলায় নজরদারি করবেন বলেই নবান্নের তরফে জারি করা হয়েছে নির্দেশিকা। পাশাপাশি ইন্টিগ্রেটেড কন্ট্রোল রুমের সঙ্গেও তাঁরা যোগাযোগ রাখবেন ২৪ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত, মুখ্যসচিব তেমনটাই নির্দেশিকা জারি করেছেন।
অন্যদিকে কালীপুজোতেই আছড়ে পড়তে পারে এই সাইক্লোন, তেমনটাই পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের। আর সেই পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই আগাম পদক্ষেপ করল নবান্ন।
আপাতত আগামী ২৩ অক্টোবর থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্র যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল। এই মর্মে মুখ্যসচিব নির্দেশ দেন দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিকে। বিশেষত পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসককে বিশেষভাবে নির্দেশ দেন যাতে মৎস্যজীবীদের এই বিষয়ে সতর্ক করা হয়।
পাশাপাশি কালীপুজোর সঙ্গে যুক্ত পুজো কমিটিগুলিকে নির্দেশ দিতে হবে যাতে প্যান্ডেলগুলির পরিকাঠামো শক্ত করা হয়।
ওই সময় ঝড়ের পূর্বাভাস রয়েছে, সেই পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই প্যান্ডেল নির্মাণ করতে হবে।
সাইক্লোন মোকাবিলায় ইন্টিগ্রেটেড কন্ট্রোল রুম চালু থাকবে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে এই মর্মেও নির্দেশ দেওয়া হয় এদিনের বৈঠকে।
এর পাশাপাশি আগামী ২৪ ও ২৫ অক্টোবর উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। সে কথা মাথায় রেখে বিশেষভাবে সতর্ক করা হয় এদিনের বৈঠকে। পাশাপাশি অমাবস্যার কথা মাথায় রেখে যাতে কালীপুজোর বিসর্জন নিয়ে ঘাটগুলিতে বিশেষ নজরদারি করা হয় সে বিষয়ে এদিন বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয় বৈঠকে। ওই সময় বান আসারও আশঙ্কা রয়েছে।
ইতিমধ্যেই ২৩ অক্টোবর থেকে সাইক্লোন পরিস্থিতি মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের ছুটি বাতিল করেছে নবান্ন। যাঁরা যাঁরা ছুটিতে রয়েছেন, তাঁদের ২২ অক্টোবরের মধ্যেই ফিরে আসার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি কালী পুজোর বিসর্জন কবে কবে হবে, সে বিষয়ে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রতিটি জেলার এস পিডি আই জি, আইজি অফিসারদের।
জলপাইগুড়ির মাল নদীতে হড়পা বানে আট জনের মৃত্যুর পর এবার বিসর্জন নিয়ে বিশেষভাবে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে চায় নবান্ন। আর তাই কালীপূজার বিসর্জনকে কেন্দ্র করেও বিশেষ সতর্ক নবান্ন। কালীপুজোর পাশাপাশি ছট পুজোয় যাতে ঘাটগুলিতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয় সে বিষয়েও এদিন দফতরের সচিবদের বিশেষ নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব, এমনই খবর নবান্ন সূত্রে।