পুবের কলম, ওয়েবডেস্কঃ দেশের প্রতি ৪ জন মুসলিমের মধ্যে ৩ জন শরিয়াহ আদালতের পক্ষে। এমনই চিত্র ফুটে উঠেছে সাম্প্রতিক এক আন্তর্জাতিকমানের গবেষণায়। দেশে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রণয়নের জন্য এক শ্রেণির মানুষ বেশ বাগাড়াম্বর করে থাকেন। ইসলামি আইনের কোনও প্রয়োজন নেই বলে সওয়াল করেন। কিন্তু দেশের মুসলিমরাই খোদ শরিয়াহ আইনের অধীনে তাদের জীবন পরিচালনা করতে চায়। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম শরিয়াহ আদালতকে সমর্থন করছেন। মুসলিমরা নিজেদের পারিবারিক বিরোধ সমাধান, উত্তরাধিকার সম্পদ বণ্টন ও বিবাহ বিচ্ছেদ সহ বিভিন্ন ইস্যুর সমাধানে শরিয়াহ আদালতের দ্বারস্থ হওয়াকে সমর্থন করেন বলে জানিয়েছে আমেরিকা-ভিত্তিক প্রখ্যাত গবেষণা সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টার। পিউ রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে ‘রিলিজিয়ান ইন ইন্ডিয়া টলারেন্স অ্যান্ড সেগ্রেগেশন’ বা ‘ভারতে ধর্ম সহনশীলতা ও বিচ্ছিন্নতা’ শীর্ষক এই সমীক্ষায় বিভিন্ন ধর্মের ২৯–৯৯৯ জন ভারতীয় নাগরিকের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। এর মধ্যে ২২–৯৭৫ জন হিন্দু ধর্মের অনুসারী এবং ৩–৩৩৬ জন ইসলাম ধর্মের অনুসারী। আর বাকিরা শিখ– খ্রিস্টান– বৌদ্ধ– জৈন।
সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে– দেশের তিন-চতুর্থাংশ তথা ৭৪ ভাগ মুসলিম ইসলামি শরিয়াহ আদালতের মাধ্যমে পারিবারিক বিবাদ যেমন বিবাহবিচ্ছেদ ও উত্তরাধিকার মামলার নিষ্পত্তিকে সমর্থন করেন। পৃথক ধর্মীয় আদালতের পক্ষের ৫৯ শতাংশ মুসলিমরা মনে করেন ধর্মীয় বৈচিত্র্য ভারতকে নানাভাবে উপকার করে। যারা মুসলিমদের জন্য পৃথক ধর্মীয় আদালতের বিরোধিতা করে তাদের শতকরা ৫০ ভাগ এই বৈচিত্র্যকে উপকারী মনে করেন। কেবল ৩০ ভাগ হিন্দু ধর্মীয় আদালতের মাধ্যমে মুসলিমদের পারিবারিক বিবাদ নিষ্পত্তিতে সমর্থন করেন। অবশ্য অনেক নাগরিক ইসলামি শরিয়াহ আদালতের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এটি ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে তারা মনে করছেন। বর্তমানে দেশে ৭০টি ইসলামি আদালত বা দারুল কাজা আছে। ১৯৩৭ সাল থেকে মুসলিমদের পারিবারিক বিবাদ নিষ্পত্তি করতে তা কাজ করছে। এর বেশিরভাগ মহারাষ্ট ও উত্তরপ্রদেশে অবস্থিত।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের এই সমীক্ষা থেকে আরও জানা যায়– শতকরা ৮০ ভাগ মুসলিম মনে করেন– মুসলিম নারীদের তাদের ধর্মের বাইরে বিয়ে বন্ধ করা খুব জরুরি। ৭৬ ভাগ মুসলিম অ-মুসলিম নারীর সঙ্গে মুসলিম পুরুষের বিবাহ বন্ধ করা জরুরি বলে মনে করেন। এ দিকে ৬৭ ভাগ হিন্দু চান না যে– অহিন্দু পুরুষের সঙ্গে হিন্দু নারীর বিবাহ হোক। আর ৬৫ ভাগ হিন্দু চান না যে হিন্দু পুরুষ অহিন্দু নারীর সঙ্গে বিয়ে হোক।