পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় করোনার নতুন ঢেউ আছড়ে পড়েছে। তাই সংক্রমণ ঠেকাতে আগেভাগেই ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। জারি হয়েছে লকডাউন। এরই মধ্যে দেশটির স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভাঙনের মুখে। হাসপাতালগুলো রোগীতে ঠাসা। আইসিইউতে শয্যা নেই। অক্সিজেন সংকটও তীব্র। এ পরিস্থিতিতে রবিবার এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে দেশটির এক হাসপাতালে। অক্সিজেন সিলিন্ডারের অভাবে প্রাণ গেছে ৬৩ জন রোগীর। হাসপাতালে হাসপাতালে অক্সিজেন সঙ্কটের ফলে হাহাকার পড়ে গিয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে প্রতিদিন নতুন করে কমপক্ষে ২৫ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার কারণে এই সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে। একে ‘যুদ্ধকালীন’ অবস্থার সঙ্গে তুলনা করেছেন কেউ কেউ।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ মহামারি ছড়িয়ে পড়েছে ইন্দোনেশিয়ায়। এরই মধ্যে প্রায় ২৩ লক্ষ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন কমপক্ষে ৬০ হাজার মানুষ। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজধানী জাকার্তার বাইরে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়। ফলে মোট আক্রান্ত বা মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি। গত সপ্তাহে দেশটির প্রধান পর্যটন কেন্দ্র বালি দ্বীপ এবং প্রধান দ্বীপ জাভা’তে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সপ্তাহান্তে বান্দুং, সুরাকার্তা এবং পামেকাসান শহরের সরকারি হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগ এবং আইসিইউ থেকে বলা হয়েছে, করোনা আক্রান্ত মানুষের ঢল নেমেছে। কিন্তু এত রোগীকে জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। বয়স্ক মাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য চেষ্টারত এক নারী বলেছেন, এখন যুদ্ধকালীন অবস্থা। একটি হাসপাতাল থেকে প্রথমে তার মাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই হাসপাতালে কোনও বেড খালি ছিল না। এখন অন্য একটি হাসপাতালের বাইরে অস্থায়ী তাঁবুতে তারা থাকার অনুমোদন পেয়েছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের কর্মকর্তা সিতি নাদিয়া তারমিজি বলেছেন, তারা গ্যাস প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোকে চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য অক্সিজেন উৎপাদন বৃদ্ধির অনুরোধ করেছেন। বলেন, ’কেউ অক্সিজেনের স্টক গড়ে তুলুন তা চাই না। যদি তা করা হয়, তাহলে অক্সিজেন সঙ্কটে অন্যদের পরিস্থিতি আরওে ভয়াবহ হবে।’ সরকার বলেছে, মে মাসের শুরুর পর থেকে রাজধানী জাকার্তায় প্রতিদিন করোনার কারণে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১০ গুন।