পুবের কলম প্রতিবেদক: টেলিমেডিসিনে প্রতিদিন এখন এক লাখেরও বেশি রোগী চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন। স্ট্রোক, হার্টের পাশাপাশি অন্য বিভিন্ন সমস্যার জন্যেও সরকারি এই পরিষেবায় রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের অসংখ্য রোগী উপকৃত হচ্ছেন। এই অবস্থায় শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে স্ট্রোকে আক্রান্ত এক হাজার রোগীর প্রাণরক্ষা করে নজির গড়ে ফেলল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
সরকারি চিকিৎসা পরিষেবা ক্ষেত্রে এ রাজ্য টেলিমেডিসিনের পরিষেবা স্বাস্থ্য ইঙ্গিত চালু হয় ২০২২-এ। এই পরিষেবায় স্ট্রোক (ব্রেন অ্যাটাক)-এ আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য শুরুতে চালু হয় টেলিস্ট্রোক। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এমনই জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার ২০২২-এর এপ্রিল মাসে যখন টেলিস্ট্রোকের পরিষেবা চালু করে, সেই সময় সরকারি স্তরে এই ধরনের পরিষেবা শুধুমাত্র চালু ছিল হিমাচল প্রদেশে।
এ দিকে, পশ্চিমবঙ্গে চালু হওয়ার পর তেলেঙ্গানায়-ও এই ধরনের পরিষেবা চালু করে সেখানকার সরকার। তবে, টেলিমেডিসিন পরিষেবার মাধ্যমে এখন স্ট্রোক, হার্টের পাশাপাশি অন্য নানা সমস্যার জন্যেও চিকিৎসা পরিষেবা চালু রয়েছে এ রাজ্যে।
বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, রোগীর চিকিৎসা যত দ্রুত শুরু করা সম্ভব হবে, ততই মঙ্গল। তবে, যথাযথ চিকিৎসাও প্রয়োজন। আর, স্ট্রোক কিংবা হার্টের কোনও সমস্যার ক্ষেত্রে কোনও মতেই সময় নষ্ট করা চলবে না। তা হলেই বিপদ বাড়তে থাকবে। ফলে, স্ট্রোক কিংবা হার্টের কোনও সমস্যায় আক্রান্তদের জন্য দ্রুত এবং যথাযথ চিকিৎসার প্রয়োজন।
অথচ, এ সব ক্ষেত্রে রোগীকে সব সময় যে যথাযথ চিকিৎসার জন্য দ্রুত নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে, তা নাও হতে পারে। এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যেই স্ট্রোক আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য টেলিমেডিসিনের পরিষেবা চালু হয় এ রাজ্যে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যাওয়ার আগেই চিকিৎসা শুরু করে দেওয়া সম্ভব হয় এখন।
স্বাস্থ্য ইঙ্গিত-এ স্ট্রোকে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য প্রধান কেন্দ্র করা হয় বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্স (বিআইএন)-কে। আর, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন স্তরের হাসপাতালকে করা হয় পরিষেবা প্রদানকারী কেন্দ্র। এই পরিষেবায় বিআইএন-এর সঙ্গে এখন পরিষেবা প্রদানকারী কেন্দ্র হিসাবে যুক্ত রয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের ৩৮টি হাসপাতাল।
আগামী দিনে এই তালিকায় আরও বিভিন্ন স্তরের হাসপাতালকে যুক্ত করা হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। আর এই ধরনের অবস্থার মধ্যেই টেলিস্ট্রোক পরিষেবার মাধ্যমে স্ট্রোকে আক্রান্ত এক হাজারতম রোগীর প্রাণ রক্ষা করে ফেলল স্বাস্থ্য দফতর। এই কৃতিত্বকে নজির বলেই মনে করছে স্বাস্থ্য দফতরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের বিভিন্ন অংশ।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন, ‘টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই স্ট্রোকে আক্রান্ত এক হাজার রোগীর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।’ এর পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘স্ট্রোক এবং হার্টের পাশাপাশি অন্য বিভিন্ন সমস্যার জন্যেও এখন টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে প্রতিদিন এখন এক লাখেরও বেশি রোগীকে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে।’