পুবের কলম ওয়েবডেস্ক: জমিয়তে উলামায়ে বাংলার রাজারহাট থানা কমিটির উদ্যোগে সত্যজিৎ রায় ভবনে শনিবার অনুষ্ঠিত হল এক বিশেষ সভা। এতে নতুন হাজী ও মহিলা হাজ্জিনদের সম্মাননা, রক্তদান, চক্ষু পরীক্ষা এবং ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে বাংলার প্রধান সভাপতি পীর ইমরান সিদ্দিকী, সম্পাদক সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারম্যান ও পুবের কলম পত্রিকার সম্পাদক আহমদ হাসান ইমরান।
পীর ইমরান সিদ্দিকী উপস্থিত হাজী ও হাজ্জিনদের সম্বোধন করে বলেন, আমাদের সংগঠন দু’টি মূল বিষয়কে নিয়ে কাজ করে। একটি হচ্ছে তাহফুজে দ্বীন, অন্যটি হচ্ছে খিদমতে খ্বালক্। অর্থাৎ দ্বীন ইসলামের সুরক্ষা এবং সৃষ্টির সেবা করা। এই শিক্ষাই দিয়ে গিয়েছিলেন ফুরফুরার পীর দাদাহুজুর আবু বকর সিদ্দিকী (রহ.)। পীর সাহেব আরও বলেন, আমাদের তাজকিয়া নফস্-এর মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। এ জন্য ইসলামী শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে জমিয়তে উলামায়ে বাংলা তালিমে জিকিরের উপর গুরুত্ব দেয়। তিনি আরও বলেন, ‘রাগ, হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার ইত্যাদিতে ভরে উঠেছে সমাজ। বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৫০ জন নিহত হয়েছেন। তার মধ্যে অধিকাংশই মুসলিম। তাই পীর ইমরানের মতে, মুসলিম নর-নারীকে শিক্ষা ও আত্মশুদ্ধির উপর বেশি জোর দিতে হবে। তাতে সমাজে খুন ও হানাহানি কমবে। তিনি আরও বলেন, মেজ হুজুর (রহ.) বলতেন, হজ করা সহজ কিন্তু হজের শিক্ষার উপর কায়েম থাকা কঠিন।
আহমদ হাসান ইমরান বলেন, হাজীদের সমাজে অন্য মানুষকেও দ্বীন ও রাসূল সা.-এর সুন্নাহ অনুসরণ করার শিক্ষা দিতে হবে। তিনি বিশেষভাবে মহিলাদের ইসলাম অনুসরণের উপর জোর দেন। বলেন, উম্মুল মুমেনিন মা খাদিজা রা., মা আয়েশা রা., সুমাইয়া রা. এদের মুসলিম নারী, পুরুষ সকলকেই অনুসরণ করতে হবে। তিনি নবী সা.-এর দু’টি হাদিস বর্ণনা করে নেক ও সৎ কাজের উপর গুরুত্ব দেন।
তিনি আরও বলেন, অমুসলিমদের সঙ্গে মুসলিমদের প্রীতি সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে। ইমরান জমিয়তে উলামায়ে বাংলার সভাপতি পীর ইমরান সিদ্দিকী ও সৈয়দ সাজ্জার হোসেনের প্রশংসা করে বলেন, তাঁরা শিরক ও বিদয়াত মুক্ত সমাজ গড়ে তোলার কাজ করছেন।
সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন তাঁর বক্তব্যে জমিয়তে উলামায়ে বাংলার অনুসারিদের দ্বীনি কাজের দাওয়াত দেওয়ার সঙ্গে ১৫ আগস্ট জমিয়তে উলামায়ে বাংলার বড় কর্মসূচি হবে তার ঘোষণা দেন।
তিনি এক মানপত্র পাঠ করে বলেন, আহমদ হাসান ইমরান আজ থেকে নয়, সুদীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে সমাজের জন্য কাজ করে চলেছেন। যখন মুসলিমদের হয়ে কলম ধরার কেউ ছিল না, সেই সময় তিনি যেসব খবর ও নিবন্ধ লিখেছেন, তা সাহস ও পরিশ্রমের ফল। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজসেবী মাওলানা আজিজ উদ্দীন-সহ অন্যান্য ব্যক্তিত্বরা।