পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম ৫ জনের নাম পাঠিয়ে ছিল বিচারপতি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের মধ্যে থেকে ৩ জনকে নিয়োগপত্র দিয়েছে আর যে দু’জন আইনজীবীকে এখনও বিচারপতি নিয়োগ করা হল না তাঁরা দু’জনই শিখ সম্প্রদায়ের। আর এই বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট সোমবার ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, দু’জন শিখ আইনজীবীকে ছাড়পত্র দেওয়া হল না। এই অবস্থা কেন চলতে থাকবে? আগের মতো ব্যবহার করবেন না, বলে ধমক দেওয়া হল অ্যাটর্নি জেনারেলকে।
বিচারপতি সঞ্জয় কিষাণ কাউল এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া এজি আর ভেঙ্কটরামনকে জানান, মি. অ্যাটর্নি এটা কিন্তু ভাল ধারনা সৃষ্টি করছে না। আপনি ‘ধরুন এবং বেছে নিন’ এই নিয়মে চলতে পারেন না। আপনি কি বার্তা দিতে চাইছেন এর মাধ্যমে? এছাড়া এলাহাবাদ থেকে একজন দিল্লির একজন এবং গুজরাতের ৪ জনকে ট্রান্সফারও করা হয়নি এখনও।
বিচারপতিদের ক্ষোভ দেখে এজি জানান, নির্বাচনের জন্য ব্যস্ত থাকায় বিলম্ব হয়েছে, তবে তাড়াতাড়ি নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। কোর্ট জানায়, কলেজিয়ামের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অর্ধেকের বেশি এখনও ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি। বিচারপতিগণ জানান, এই দেরি হওয়ার ফলে সিনিয়রিটি মানা সম্ভব হবে না। পরে অসুবিধা সৃষ্টি হবে। সুপ্রিম কোর্ট ইতিপূর্বে এই বিষয়ে সতর্ক করেছে কিন্তু এখনও সেই প্র্যাকটিস চলছে।
যে দু’জন আইনজীবীর নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ক্ষোভপ্রকাশ করেছে তাঁরা হলেন হরমিত সিং গ্রেওয়াল এবং দীপেন্দ্র সিং নালওয়া। তাঁদের দু’জনেরই পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ হওয়ার কথা। কিন্তু কোনও কারণে নিয়োগ আটকে রেখেছে কেন্দ্র। এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে ৫ ডিসেম্বর। তবে এজি আশ্বাস দিলেন এইদিন আর অন্যথা হবে না। বিচলিত হতে হবে না কোর্টকে। উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে বহুবার সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামের সিদ্ধান্তকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়নি কেন্দ্র সরকার। কয়েকজনের নাম ফেরতও পাঠানো হয়েছিল। আইনমন্ত্রকের সচিবকে একবার তলব করা হয়েছিল কোর্টে এইসব কারণে। এই নিয়ে আইনমন্ত্রী রিজিজুর মন্তব্য নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি হয়। সুপ্রিম কোর্টের চাপের কাছে কিছুটা নমনীয় হয় কেন্দ্র। কিন্তু আবারও সেই ইস্যু সামনে এল। আদালত ইতিপূর্বে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিল সরকারের পছন্দ মতো না হওয়ায় কলেজিয়ামের পাঠানো নাম আটকে দেওয়া বিপজ্জনক প্রবণতা। নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে ৩ জনকে নিয়োগ দেওয়া হল আর দু’জনকে আটকে দেওয়া হল। এটা কোনও যুক্তি হতে পারে না। সরকার কখনই ‘পিক অ্যান্ড চুজ’ নীতি গ্রহণ করতে পারে না বলে সোমবার ক্ষোভপ্রকাশ করলেন বিচারপতিরা।