পুবের কলম প্রতিবেদকঃ এবার নিজেদের ’গুয়ানতানামো বে’ বানাচ্ছে যুক্তরাজ্য। ইংলিশ চ্যানেল জুড়ে মানব পাচার বন্ধ করতে রুয়ান্ডার সাথে একটি বড় চুক্তি স্বাক্ষর করেছে তারা। যে উদ্যোগ তারা নিয়েছে তার জন্য ইতিমধ্যেই যুক্তরাজ্যের কঠোর সমালোচনা শুরু হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে, প্রাক্তন মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস,অ্যান্ড্রু মিচেল এবং সাইমন হোয়ার সহ টোরি পার্টির সিনিয়ার নেতারা বলেন মানব পাচার রুখতে যে তৎপরতা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং তার জন্য যে চুক্তি হয়েছে তাতে আসলে ‘ব্রিটিশ গুয়ানতানামো বে’ তৈরি হবে। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন তারা।
শরণার্থীদের নানা মানবিক সংকট নিয়ে এতদিন যে যুক্তরাজ্য সরব হয়েছে এখন তারাই বানাতে চলেছে গুয়ানতানামো বে-এর মত কারাগার। আক্ষরিক অর্থে কারাগাব না হলেও তা বানানোর উদ্দেশ্য হল আসলে শরণার্থী ও উদ্বাস্তুদের টাইট দেওয়া। যারা নানা সংকটে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় চাইছে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে আফ্রিকার রুয়ান্ডায়। ইউরোপ জুড়ে যারা মানবাধিকারের কথা বলে তাদের এমন ভমিকায় যে ব্যাপক প্রতিবাদ ও সমালোচনা হবে সেটাই স্বভাববিক।
বৃহস্পতিবার স্বাক্ষরিত হয়েছে ইউকে-রুয়ান্ডা মাইগ্রেশন পার্টনারশিপ। বেশিরভাগ আশ্রয়প্রার্থী যারা নৌকায় চড়ে কিংবা ট্রাকে লুকিয়ে ইউকেতে আশ্রয় নেন এবার তাদের পাঠানো হবে রুয়ান্ডায় । গালভরা পুনর্বাসনের কথা বলা হলেও আসলে তাদের সেখানে একপ্রকার কারাগারবন্দি জীবনই কাটাতে হবে। সেইকারাগার হবে ব্রিটিশ গুয়ানতানামো বে।
যাদের রুয়ান্ডায় আশ্রয় দেওয়া হবে তাদের বহু খরচ দেবে ইউকে। পাঁচ বছর পর্যন্ত তাদের শিক্ষা, বাসস্থান এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা দেবে ব্রিটেন। ইউকে চাইছে যারা ইউকের কাছে আশ্রয় চাইছে, তাদের আবেদন মঞ্জুর না হওয়া পর্যন্ত তৃতীয় দেশে এই আশ্রয়প্রার্থীদের পাঠানো হবে। এমনটাই পরিকল্পনা তাদের। যুক্তরাজ্যের পরিকল্পনা গত বছর ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছিল। ব্রিটিশ উপনিবেশ আইল অফ ম্যান এবং জিব্রাল্টার ঘোষণা করেছিল যে তারা কোনো আশ্রয়প্রার্থীকে গ্রহণ করবে না। এবার রুয়ান্ডার সঙ্গে তারা এই চুক্তি করে ফেলল।
এর আগে যুক্তরাজ্য, ব্রিটিশ উপনিবেশ অ্যাসেনশন দ্বীপে উদ্বাস্তুদের পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল। গত বছর তা ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। ঘানা এবং আলবেনিয়ার সঙ্গে একই ধরণের চুক্তি করার চেষ্টা করেছিল যুক্তরাজ্য। তবে সেটিও ব্যর্থ হয়েছিল। রুয়ান্ডার নেতা ফ্রাঙ্ক হাবিনেজারের ডেমোক্র্যাটিক গ্রিন পার্টি বলেছেন, তারা শরণার্থীদের সমর্থন করবে। তবে আশ্রয়প্রার্থীদের জোরজবরদস্তি করা ঠিক হবে না। সে কারণেই যুক্তরাজ্য সহ ধনী দেশগুলির সমালোচনা হচ্ছে। তাদের দেশে যারা আশ্রয় প্রাথনা করছে, তারা তাদের সেখানে আশ্রয় না দিয়ে অন্য দেশে পাঠিয়ে দিতে চাইছেন।