ইনামুল হক, বসিরহাটঃ মাধ্যমিকে সম্ভাব্য মেধাতালিকায় অষ্টম স্থান অধিকার করল উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থানার নারকেলবেড়িয়া গ্রামের দিনমজুর ঘরের সন্তান রোহন মন্ডল। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯০। শহিদ তিতুমীরের পূণ্যভূমি নারকেলবাড়িয়ার রোহন মন্ডল বরাবরই মেধাবী। স্থানীয় কেওটশা হাইস্কুল থেকে সে এবারে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেয় কিন্তু করোনা আবহে পরীক্ষা বাতিল হয়ে গেলেও তার নবম শ্রেণীর এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের ভিত্তিতে যে নম্বর পেয়েছে তা সবাইকে চমকে দিয়েছে। বিশেষ করে এই স্কুলের মেধাবী ছাত্র হিসেবে একটি উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছে। এতে গর্বিত তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোবাসসার হোসেন, গৃহশিক্ষকতা কেন্দ্রের শিক্ষক আজিজুল হক সহ অন্য শিক্ষকরাও। পাশাপাশি নারকেলবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা রোহনের এই সাফল্যে খুশি। ঐতিহাসিক গ্রামের ছেলে হিসেবে এই সাফল্যের প্রশংসা করেছেন শহিদ তিতুমীর মিশনের সম্পাদক রবিউল হক সহ অন্যরা।
ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শংসাপত্র পৌঁছে গেছে রোহনের বাড়িতে। কিন্তু এত খুশির মধ্যেও দুশ্চিন্তার ভাঁজ রোহনের দিনমজুর বাবা কবীর আলি মণ্ডলের কপালে। বড় দুই কন্যা সন্তান ও একমাত্র পুত্র রোহনকে মানুষ করে তুলতে আর্থিক অনটনের মধ্যে পিতা জাহাঙ্গীর কবীরের স্বপ্ন সফল হওয়ার সামনে এক বড় প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে। তার ইচ্ছে আল আমিন মিশনে পড়িয়ে ছেলেকে চিকিৎসক করার। কিন্তু অর্থাভাবে তা পূর্ণ হল না। অগত্যা স্থানীয় দক্ষিণ চাতরা হাই স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছে রোহন। আর্থিক সহযোগিতা পেলে রোহন তার স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারবে বলে মত প্রকাশ করেছে। রোহন আশা প্রকাশ করে আগামীতে কোভিড-এর মতো এই ভয়ানক পরিস্থিতি থেকে মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরে আসবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থী মহল স্বাভাবিক নিয়মে লেখাপড়ায় মন দিতে পারবে। তার স্বীকারোক্তি এটাই সাফল্যের শেষ কথা নয়। আগামী দিনে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ-এর লক্ষে একটি উদ্দীপক হিসেবে এই ফলাফল হয়তো খানিকটা কাজে লাগবে। নারকেলবাড়িয়ার কৃতি সন্তান হিসেবে এই সাফল্যে গর্ব অনুভব হলেও সে চায় শিক্ষার আঙিনায় সকলেই আসুক শহিদ তিতুমীরের পূণ্যভূমি নারকেলবাড়িয়ার সব ঘরের ছেলেমেয়েরা।