কিবরিয়া আনসারী: চাল ও গমের বাজারদর নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ‘মুক্ত বাজার বিক্রি প্রকল্প’র মাধ্যমে পুনরায় নিলাম শুরু হবে। ফলে সাধারণ জনগণের চাল-গম কেনার সামর্থ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করলেন ভারতীয় খাদ্য নিগমের রিজিওনাল জেনারেল ম্যানেজার ড. রাজেশ গুলিয়া। বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘খোলা বাজারে খাদ্য দ্রব্যের সংকট তৈরি হলে মূল্যবৃদ্ধি বেড়ে যায়। প্রধান খাদ্যশস্য চাল ও গমের বাজারদর নিয়ন্ত্রণ করতে ‘মুক্ত বাজার বিক্রি প্রকল্প’ চালু করেছে ভারতীয় খাদ্য নিগম। এই প্রকল্পের মাধ্যমে খোলা বাজারে চাল-গম বিক্রি করে থাকে এফসিআই। গত ২৪ জুন থেকে পুনরায় শুরু হয়েছে এই প্রকল্প’।
তিনি আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র রাজ্য সরকারকেই চাল-গম বিক্রি করা নয়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে খোলা বাজারেও চাল-গম বিক্রি করা হয়। তবে খোলা বাজারে বিক্রির ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানতে হবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের।’নিয়মের কথা বলতে গিয়ে তিনি জানান, ‘তালিকাভুক্ত বড় ক্রেতা, ব্যবসায়ী, প্রস্তুতকারক সংস্থা যারা গম-চাল থেকে আটা, সুজি ও অন্যান্য দ্রব্য তৈরি করে বাজারে বিক্রি করেন তাঁরাই এই সুযোগ পাবেন। বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার পর ‘এম জংশন’পোর্টালের মাধ্যমে নাম নথিভুক্ত করতে হবে ক্রেতাদের। ৯ সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি জারি হবে এবং ১৩ সেপ্টেম্বর নিলাম অনুষ্ঠিত হবে। তবে একটি প্যান-ট্যান কার্ডের মাধ্যমে একবারই নিলামে অংশ নেওয়া যাবে। এতে ক্রয় করার ক্ষেত্রে সবাই সুযোগ পাবেন। চাল-গম কেনার পর তা সঠিক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না তা দেখতে নিয়মিত মিল ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করবেন আধিকারিকরা।’
বৃহস্পতিবার কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে ভারতীয় খাদ্য নিগমের পশ্চিমবঙ্গের রিজিওনাল অফিস কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত ওই সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের রিজিওনাল জেনারেল ম্যানেজার ড. রাজেশ গুলিয়া, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সুভাষ কুমার ও প্রদীপ সিংহ, কর্মাশিয়াল ম্যানেজার গোপাল মজুমদার।
দেশজুড়ে গমের ন্যূনতম মূল্য কুইন্টাল প্রতি ২১৫০ টাকা, ইউআরএস গমের ন্যূনতম মূল্য কুইন্টাল প্রতি ২১২৫ টাকা ধার্য করা হয়েছে। পাশাপাশি চালের ন্যূনতম মূল্য কুইন্টাল প্রতি ২৯৭৩ টাকা করা হয়েছে বলে জানান রাজেশ গুলিয়া। এক পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি বলেন, ‘এফসিআই-এর ‘এম জংশন’ পোর্টালের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ১১টি নিলাম করা হয়েছে। ই-নিলামে মোট দুই লক্ষ তেতাল্লিশ হাজার ছয়শো মেট্রিক টন গম এবং এক লক্ষ উনিশ হাজার পাঁচশো বাহাত্তর হাজার মেট্রিক টন চাল বিক্রি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ‘মুক্ত বাজার বিক্রি প্রকল্প’-এ ভালো সাড়া মেলায় পুনরায় নিলাম প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর, ১৮,০০০ মেট্রিক টন গম এবং ১৬৩০০ মেট্রিক টন চাল বিক্রির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া দেওয়া হবে। চাল-গমের সামগ্রী প্রস্তুতকারক মিল ও সংস্থাগুলো এই নিলামে সর্বনিম্ন ১০ মেট্রিক টন থেকে ১০০ মেট্রিক টন পর্যন্ত ক্রয়ের জন্য নিলামে অংশ নিতে পারবেন।’