পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) খুব দ্রুত ডিজিটাল রুপি বা ই-রুপির জন্য একটি পাইলট প্রোগ্রাম শুরু করতে চলেছে। আরবিআই বলেছে, এই ডিজিটাল রুপির শুরু আগে সাময়িক কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এর পর বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য এই মুদ্রার প্রচলন করা হবে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বর্তমানে একটি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ডিজিটাল মুদ্রার সুবিধা এবং অসুবিধাগুলি পর্যালোচনা করেছে। এর পর এই উদ্যোগ পর্যায়ক্রমে এই ব্যবস্থা প্রচলনের জন্য পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে।
সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কারেন্সি বা সিবিডিসি হবে এক ধরনের ভার্চুয়াল কারেন্সি। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মতোই সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক এই কারেন্সি জারি করবে। এক কথায়, কাগজের নোটের মুদ্রার ডিজিটাল সংস্করণ হবে এটা। এ ধরনের মুদ্রার এই ধারণা দিয়েছিলেন আমেরিকান অর্থনীতিবিদ এবং নোবেল বিজয়ী জেমস তাসিন। তিনি গত শতাব্দীর আটের দশকেই পেমেন্টের এই ডিজিটাল আকারের কথা বলেছিলেন।
কাগজের নোটের মুদ্রার পরিমাণ হ্রাস করা এবং আর্থিক লেনদেন আরও সহজতর করতে নিজস্ব ই-কারেন্সি নিয়ে আসছে আরবিআই। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের মতে, পেমেন্ট ব্যবস্থাকে আরও সাশ্রয়ী এবং সহজ করতে এই পরিকল্পনা। আরবিআই বলেছে, এটি শীঘ্রই নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে ই-রুপির ব্যবহারের জন্য পাইলট প্রকল্প চালু করবে। প্রতিক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে, ই-রুপি ব্যবহারের পরিধি আরও বিস্তৃত হবে। তবে এই ই-রুপির প্রবর্তন কোনো ভাবেই কাগজের মুদ্রাকে ধ্বংস করবে না। ঐতিহ্যগত ভাবে যেভাবে লেনদেন প্রথা চলে আসছে তা বজায় থাকবে।
আরবিআই বলেছে, ই-রুপির মানও একই হবে। অর্থাৎ, কাগজের মুদ্রার মতোই সমান ভাবে তা বিনিময়যোগ্য হবে। এটা “লেনদেনর একটি মাধ্যম, আইনি দরপত্র এবং মূল্যের একটি নিরাপদ ভাণ্ডার হিসাবে গ্রহণ করা হবে। সে ক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ব্যালেন্স শিটে দায় হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হবে সিবিডিসি।
সম্ভবত ই-রুপিতে মুদ্রা ইস্যু এবং পরিচালনার জন্য একটি পরোক্ষ মডেল থাকবে। যেখানে মধ্যস্থতাকারীরা (যেমন ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা) গ্রাহকদের সঙ্গে লেনদেন করবে। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক শুধুমাত্র মধ্যস্থতাকারীদের পাইকারি হারে টাকা দিয়ে থাকে।
সিবিডিসি (CBDC) কি
সিবিডিসি মূলত ঝুঁকিমুক্ত ডিজিটাল মুদ্রা, যা কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক জারি করে। আমাদের ক্ষেত্রে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এই মুদ্রা জারি ও নিয়ন্ত্রণ করবে। আরবিআই বলছে, সিবিডিসি-কে ‘টোকেন-ভিত্তিক’ বা ‘অ্যাকাউন্ট-ভিত্তিক’ মুদ্রা হিসাবে গ্রহণ করা যেতে পারে। যে টোকেন বহন করবে তাকে টোকেন সিস্টেমে সিবিডিসি-র মালিক বলে ধরে নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে অ্যাকাউন্ট-ভিত্তিক সিস্টেমে, একজন মধ্যস্থতাকারীকে এর সমস্ত ধারকদের ব্যালেন্স এবং লেনদেনের রেকর্ড বজায় রাখতে হবে। সিবিডিসির নিয়ন্ত্রণ থাকবে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের হাতে। বড় লেনদেনে নোটের জায়গায় সিবিডিসি-র ব্যবহার মুদ্রণ, পরিবহণ, রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিতরণের খরচ কমিয়ে দেবে।