ইনামুল হক, বসিরহাট: ঈমানের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিলেন ঐক্যপন্থী আলেম ও বুদ্ধিজীবীরা। রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার বেড়াচাপার রহমতে আলম মিশন এর সেমিনার হলে ‘সমাজ গঠনে ইসলামী ঐক্যমত’ বিষয়ক একটি সেমিনার এর আয়োজন করা হয়। এই সেমিনারে প্রারম্ভিক বক্তব্যে আহবায়ক বিশিষ্ট আলেম ও শিক্ষক মাওলানা আমিনুল আম্বিয়া বলেন,পৃথিবীর শতধা বিচ্ছিন্ন জাতিকে রাসূলুল্লাহ সা. ঈমানের ভিত্তিতে একটি মজবুত মুসলিম জাতিতে পরিণত করেছিলেন।
ইসলামের কালেমা পড়ে ঈমানের মৌলিক বিষয়ের প্রতি যারা বিশ্বাস রাখে আল্লাহ তাদের পরস্পরকে ভাই বলে আখ্যায়িত করেছেন কোরআনে। রাসূলুল্লাহ বলেছেন তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত মোমিন হতে পারবেনা যতক্ষণ না পর্যন্ত অন্য মুসলমান ভাইকে ভালবাসতে পারো। আরো বলেছেন যার জবান এবং হাত থেকে অন্য মুসলমান নিরাপদ নয় সে প্রকৃত মুসলমান হতে পারেনা। কিন্তু বর্তমানে আমরা গভীরভাবে লক্ষ্য করছি একে অপরের প্রতি ভালবাসার পরিবর্তে হিংসা এবং বিদ্বেষ বেড়ে চলেছে। তুচ্ছ তুচ্ছ কারণে একে অপরকে কাফের, মুশরিক, ইহুদী-নাছারার দালাল শয়তান ইত্যাদি বলতেও কুন্ঠিত হচ্ছে না। আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি হিংসা-বিদ্বেষ আলেম উলামাদের মধ্যেও ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে।
ওয়াজের মাহফিলে প্রকাশ্যে একে অপরকে গালি দিতেও কুন্ঠিত হচ্ছে না। ইসলামের মৌলিক বিষয় ছেড়ে গৌণ বিষয়গুলিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কিছু কিছু বক্তা সমাজকে বিভাজিত করে তুলেছে। এমতাবস্থায় আমরা যারা ইসলামকে সত্যিকার অর্থে ভালোবাসি, সব মুসলমানকে ভাই বলে মনে করি, মাসলাকের মতপার্থক্য সত্ত্বেও নিজেদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে চেষ্টা করি, তারা চুপচাপ থাকতে পারি না। ‘মাসলাক যার যার ইসলাম সবার’ এই নীতি কে সামনে রেখে আমাদের নিজেদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে, নইলে নিজেদের পায়ে কুড়ুল মারা হবে। ঐক্য প্রচেষ্টার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এই আলোচনা সভার আয়োজন ।
বক্তব্য রাখেন বসিরহাট কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. জহর আলী মন্ডল, জামাতে ইসলামী হিন্দের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নাজিম মাওলানা রফিকুল ইসলাম, শিক্ষক আলী আকবর,মাওলানা রুহুল আমিন, মাওলানা শামসুদ্দোহা কাশেমী, মাওলানা আব্দুল মোমেন, ড. ফজলুর রহমান, মাওলানা জাকির হোসেন, রহমতে আলম মিশন এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য মাওলানা রুহুল আমিন প্রমুখ। সভা থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে আগামীতে এই ধরনের ঐক্য আলোচনা সভা বিভিন্ন এলাকাতে করা হবে। ঐক্যপন্থী আলেম এবং বুদ্ধিজীবীদের একজোট করার চেষ্টা করা হবে। ইসলামী জলসায় বক্তারা যাতে ইচ্ছামত বক্তব্য না রাখতে পারেন তার জন্য জলসা কমিটিকে বিষয়বস্তু নির্ধারণ করে দিতে অনুরোধ করা হবে। সর্বোপরি প্রচার মাধ্যমের মাধ্যমে ঐক্যের বার্তা সর্বত্র প্রচার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।