পারিজাত মোল্লা: সম্প্রতি বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। নানান বিতর্কের মাঝে অবসর পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন তিনি। এই মামলা গুলির শুনানি ছিল বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এর এজলাসে। এদিন সিঙ্গেল বেঞ্চ জানিয়েছে, ‘আদালতের নির্দেশ ছাড়া পুলিশ বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করতে পারবে না’। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বুধবার এই নির্দেশ দিয়েছেন। এদিন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বেঁচে থাকলে আপনারা তো তাঁকেও অভিযুক্ত বানিয়ে দিতেন!’
গত ৭ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে উপাচার্য একটি চিঠি লেখেন। তার পরের দিনই তাঁর কার্যকালের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ওই চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর শিল্পীসত্তা নিয়ে কিছু মন্তব্য করা হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই রাজ্য সরকার বিদ্যুতের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ তার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করেন। সেই মামলায় এদিন বিচারপতি সেনগুপ্ত বলেন, ‘প্রাথমিক অনুসন্ধান না করেই পুলিশ এই অভিযোগের মধ্যে ধর্তব্যযোগ্য অপরাধ পেয়ে গেল। আর এফআইআর দায়ের হয়ে গেল? পুলিশ সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন দেখারও প্রয়োজন মনে করেনি’। এর প্রতুত্তরে রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে পুলিশ এফআইআর দায়ের করেছে’।
কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশের পুলিশের কেস ডায়েরি তলব করেছে।প্রাক্তন উপাচার্যের বিরুদ্ধে টোটো চালানো নিয়েও অভিযোগ আনা হয়েছে। টোটোচালকরা অভিযোগ করেছিলেন, তখন উপাচার্য তাঁদের নির্দিষ্ট রুটে টোটো চালাতে বাধা দেন। এই মর্মে অভিযোগও দায়ের হয়। এদিন এই মামলার শুনানি পর্বে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত বলেন, ‘যে পুলিশ অফিসাররা এই এফআইআরগুলি করেছেন, তাঁরা রাজ্য সরকারকেই বিড়ম্বনায় ফেলেছেন। আমি বিশ্বাস করি না যে, রাজ্য প্রশাসনের কেউ পুলিশকে এসব করার নির্দেশ দিয়েছেন। যদি বিশ্বভারতীর কোনও নিরাপত্তা আধিকারিক টোটোচালকদের নিষেধ করেও থাকেন। তাহলে পুলিশ হস্তক্ষেপ করলেই মিটে যেত। এফআইআর করার কোনও দরকার ছিল না’। সওয়াল শেষে বিচারপতি নির্দেশ দেন, ‘প্রাক্তন উপাচার্যকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারবে না’। আগামী ১১ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
নিম্ন আদালতে দাখিল মামলা গুলির মধ্যে দুর্গাপূজা নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করা হয়েছে বলে মামলা হয়েছে প্রাক্তন উপাচার্যের বিরুদ্ধে। আদালতের নির্দেশ, এই মামলায় গ্রেফতার করা যাবে না বিদ্যুত্ চক্রবর্তীকে, তবে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত চলবে।