পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: রাজস্থানের ভিওয়াড়ি থেকে পাকিস্তানে যাওয়া অঞ্জু ফের ভারতে ফিরে এসেছেন। নিরাপত্তা এজেন্সিগুলি জিজ্ঞাসাবাদও চালাচ্ছে। অঞ্জুর স্বামী অরবিন্দ এবং দুই সন্তান তাঁর সঙ্গে দেখা করতেও অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানে গিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নসরুল্লাহর সঙ্গে নিকাহ্ করেন। নাম বদলে এখন তিনি ফতিমা।
শুক্রবার গোয়েন্দা বিভাগের একটি টিম অঞ্জুর স্বামী অরবিন্দের ফ্ল্যাটে পৌঁছে অরবিন্দ ও তাঁর দুই সন্তানের সঙ্গে কথা বলে। এই মামলা নিয়ে ভিওয়াড়ির অ্যাডিশনাল এসপি দীপক সাইনি জানান, অঞ্জুর বিরুদ্ধে এফআইআর নিয়ে তদন্ত চলছে। এই মামলার সংশ্লিষ্টদের বয়ানও রেকর্ড করেছে পুলিশ। অ্যাডিশনাল এসপি জানান, অঞ্জু ভিওয়ারি এলে তাঁকে এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। নিয়ম অনুসারে তদন্ত করা হবে। প্রয়োজনে অঞ্জুকে গ্রেফতারও করা হতে পারে।
পাঁচ মাস পর পাকিস্তান থেকে ভারতে এসেছেন অঞ্জু। অরবিন্দ জানান, এখনও অঞ্জুর সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি। বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লাগে। কিন্তু অঞ্জু এক মাসের এনওসিতে ভারতে এসেছেন। অঞ্জুর সন্তানদের কাস্টডি বিচ্ছেদের পরই মিলবে। আইনজ্ঞদের বক্তব্য, বিবাহবিচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত মা তাঁর সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন না।
অঞ্জু বুধবার তাঁর পাকিস্তানি স্বামী নসরুল্লাহর সঙ্গে ওয়াঘা বর্ডারে পৌঁছান। সেখানে গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিক এবং পঞ্জাব পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। ভারত পৌঁছে অঞ্জু মিডিয়ার সামনে পাকিস্তানের খুব প্রশংসা করেন।
অঞ্জু জানান, পাকিস্তানে তিনি দারুন আতিথেয়তা পেয়েছেন। কোনও সমস্যা হয়নি। ভারতে আসার কারণ নিয়ে তিনি জানান, অরবিন্দকে তালাক দিয়ে তাঁর সন্তানদের নিয়ে তিনি পাকিস্তানে ফিরতে চান। পঞ্জাবের গোয়েন্দা বিভাগে জিজ্ঞাসাবাদের পর অঞ্জুকে অমৃতসর থেকে দিল্লি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। দিল্লি বিমানবন্দরে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে অঞ্জু জানান, তিনি সব প্রশ্নেরই জবাব দেবেন কিন্তু এখন নয়।
যদিও তাঁর স্বামী সন্তানরা দেখা করতে চান না। অরবিন্দের আত্মীয়স্বজনরাও অঞ্জুর উপর খুবই রুষ্ট। অরবিন্দ যে সোসাইটিতে থাকেন সেখানে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সোসাইটিতে আসা যানবাহনে তল্লাশিও চালানো হচ্ছে।
২০০৭ সালে অঞ্জু অরবিন্দের বিয়ে হয়। অঞ্জুর স্বামী অরবিন্দ ভিওয়াড়ির ফুলবাগ থানায় অঞ্জু এবং নসরুল্লাহর বিরুদ্ধে ধারা ৩৬৬, ৪৯৬, ৫০০, ৫০৬ এবং আইপিসি ৬৬ আইটি অ্যাক্টে মামলা রুজু করেন। অরবিন্দের অভিযোগ, অঞ্জু বিবাহিত হওয়া সত্ত্বেও বিবাহ বিচ্ছেদ না নিয়ে বিয়ে করে প্রতারণা করেছে, এছাড়াও পাকিস্তান থেকে হোয়াটস অ্যাপে হুমকিও দিয়েছে।
ভিওয়াড়ি থেকে অঞ্জু পাকিস্তান পাড়ি দেন পাঁচ মাস আগে। ভিন দেশে যাওয়ার সময় তাঁর স্বামী অরবিন্দকে জানান, তিনি জয়পুরে তাঁর এক বান্ধবীর বাড়িতে যাচ্ছেন। কিন্তু অঞ্জু বর্ডার পার করে পাকিস্তান চলে যাওয়ার পর অরবিন্দকে প্রকৃত সত্য জানায়। এরপর সে নসরুল্লাহর সঙ্গে দেখা করে।এই খবর সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। পাকিস্তানে গিয়ে প্রথমেই অঞ্জু ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে এবং নিজের নাম পরিবর্তন করে ফতিমা রাখে। এরপর তার ফেসবুক ফ্রেন্ড নসরুল্লাহকে নিকাহ করে।
একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়, যেখানে নসরুল্লাহ এবং তার বন্ধুদের সঙ্গে খাওয়ার টেবিলে বোরকা পরে দেখা যায় অঞ্জুকে। সম্প্রতি ওয়াঘা বর্ডার হয়ে ভারতে ফিরেছেন অঞ্জু। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। দিল্লি এয়ারপোর্টে সাংবাদিকরা অঞ্জুর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। কিন্তু অঞ্জুর মনোভাবে বদল নজরে পড়ে। অঞ্জু পাকিস্তানে কোথায় ছিলেন, কি করছিলেন সমস্ত প্রশ্নের জবাব চাইছেন নিরাপত্তা এজেন্সির আধিকারিকরা।