পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির সুবিধা নেওয়ার জন্য মৃতকে ‘জীবিত’ দেখানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷
এটি কৌতুক নয়, ইউপির একটি বাস্তবতা। সরকারিভাবে আধিকারিকরা তা মেনে নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হতে কৃষকদের আকৃষ্ট করার জন্য মোদি সরকার প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি চালু করেছিল। বিজেপি ভেবেছিল, কৃষকদের কিছু টাকা দেওয়া হলে তারা দলকে ভোট দেবেন। বিজেপির চিন্তা-প্রক্রিয়া ছিল তারা বিরোধীদের ছাড়িয়ে যাবে এবং সর্বাধিক লোকসভা আসন জিতবে। অতএব, মোদি সরকার সাধারণ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে ফেব্রুয়ারি ২০১৯-এ এই স্কিমটি চালু করে।
ক্ষমতায় আসার পরও বিজেপি এই পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছে। অনেক কৃষক মারা গেছে, কিন্তু স্কিমের অর্থ তাদের অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
২০১৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৭৭,৮৮৯ জন কৃষক মারা গেছেন। কিন্তু ‘মৃত কৃষকরা’ প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির অধীনে অর্থ পেতেই আছে। মৃত কৃষকদের এই টাকা মৃত কৃষকের নির্ভরশীল বা অন্য কেউ তুলে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
পরে বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য ইউপির কৃষি দফতর কর্মকর্তাদের চিঠি দেয়।
উত্তরপ্রদেশ কৃষি দফতরের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব ডঃ দেবেশ চতুর্বেদী বলেছেন, “এ ধরনের কত প্রতারণার মামলা আছে তা খতিয়ে দেখা হবে। যদি তাদের উত্তরাধিকারীরা অর্থ উত্তোলন করে থাকে তবে এই পরিমাণ টাকা তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে উদ্ধার করা হবে। উত্তরাধিকারের মামলাগুলো মিটমাট করা হচ্ছে। এর পরে এই ধরনের মামলার সংখ্যাও বাড়তে পারে”।
যোগী রাজ্যে কেন্দ্রের এই প্রকল্প নিয়ে আরও বড়সড় জালিয়াতি সামনে এসেছে। যাচাই-বাছাইয়ে এখন পর্যন্ত এমন ৩ লাখ ১৫ হাজার ১০ জন সুবিধাভোগীর সন্ধান মিলেছে, যারা এই প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার যোগ্য নন।
উত্তরপ্রদেশে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ যোজনা প্রকল্পের সুবিধাভোগী অনেক কৃষককে রিকভারি নোটিশ জারি করা হয়েছে। জারি করা বিজ্ঞপ্তি অনুসারে, যে কোনও করদাতা যিনি প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনার সুবিধা নিয়েছেন, তাঁদের এখনই সেই অর্থ ফেরত দিতে হবে।
এখনও পর্যন্ত ২.৫৫ কোটি কৃষক রয়েছেন, যাঁরা অন্তত একবার প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধির সুবিধা পেয়েছেন। এর মধ্যে ৬.১৮ লাখ কৃষক এমন আছেন, যাদের আধার নম্বর ভুলভাবে ডেটাবেসে প্রবেশ করানো হয়েছে অথবা আবেদন এবং নথিভুক্ত আধার কার্ডের নামের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এ ধরনের মানুষ পরবর্তীতে আর এই প্রকল্পের আওতায় কোনও কিস্তির টাকা পাননি।