পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার পার্থে বহু প্রতীক্ষিত পাকিস্তান-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট সিরিজ শুরু হতে চলেছে। যা নিয়ে গোটা অস্ট্রেলিয়া জুড়ে চড়ছে আলাদা একটা উন্মাদনার পারদ। যদিও এর পাশাপাশি আরও একটি বিষয় নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে এই সিরিজকে ঘিরে। সেটা অবশ্য কোনও ক্রিকেটীয় বিষয় নয়। কারণটা আইসিসি ও অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার উসমান খোয়াজার মধ্যে তৈরি হওয়া নয়া বিবাদ।পার্থ টেস্টে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানাতে স্লোগানসংবলিত একটি জুতো পরে খেলতে চেয়েছিলেন খোয়াজা। যদিও বিশ্বক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ওই জুতো পরে খোয়াজা মাঠে নামতে পারবেন না। আইসিসির এই সিদ্ধান্ত শোনার পর এদিন খোয়াজা জানান, তিনি কোনও রাজনৈতিক বিষয় সবার সামনে তুলে ধরছেন না। তার উদ্দেশ্য সবার স্বাধীনতা ও সমান অধিকার নিয়ে কথা বলা। আর এটা করতে তাকে কেউ আটকাতে পারবে না। এমনকি আইসিসিও না।
গাজা উপত্যকা ইসরাইলি বাহিনীর টানা দেড় মাসের অভিযানে নিহত হয়েছেন প্রায় ২০ হাজারেরও কাছাকাছি ফিলিস্তিনি। নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদ বহু মানুষ জানিয়েছেন। ঠিক সেই উদ্দেশ্য নিয়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে পার্থ টেস্টে একটি বিশেষ বার্তা সম্বলিত জুতা পরতে চেয়েছিলেন খোয়াজা। অজি ওপেনার ওই জুতো অনুশীলনেও পরেছিলেন।
তার জুতোয় লেখা বার্তাটি ছিল, ‘স্বাধীনতা একটি মানবাধিকার, প্রতিটি জীবনের মূল্য সমান।’ যদিও শেষ মুহূর্তে আইসিসি জানিয়েছে, তিনি ওই জুতো পরে মাঠে নামতে পারবেন না।জুতোয় যেটা লেখা, সেটা রাজনৈতিক। এর প্রতিবাদ জানিয়ে খোয়াজা এদিন আইসিসিকে উদ্দেশ্য করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেন, ‘আমার কর্মকাণ্ডে যারা কষ্ট পেয়েছেন, তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন করতে চাই। স্বাধীনতা কি সবার জন্য নয়? প্রতিটি জীবন কি সমান নয়? আমার কাছে আপনি কোন জাতি, কোন ধর্মের, কোন সংস্কৃতির তাতে কিছু আসে যায় না। প্রতিটি জীবন সমান বলায় যদি কেউ কষ্ট পান, দয়া করে আমাকে ফোন করুন। বলুন, আমি যেটা নিয়ে কথা বলছি, সেটা কি বড় সমস্যা নয়?
ওই ভিডিয়ো পোস্টে পাক বংশোদ্ভূত খোয়াজা আরও বলেন, ‘আইসিসি বলছে, আমি নিজের জুতোয় যেটা লিখেছি, সেটা রাজনৈতিক। বিষয়টি আমি পরিষ্কার করে জানাতে চাই, আমার জুতোয় যেটা লেখা আছে, সেটা রাজনৈতিক নয়। আমি কারোর পক্ষ নিইনি। আমার কাছে প্রত্যেকটি মানুষের জীবন সমান। একজন ইহুদি, একজন মুসলিম, একজন হিন্দু ও অন্য ধর্মের প্রত্যেকের জীবন আমার কাছে সমান। যাদের কথা বলার সাহস কিংবা ক্ষমতা নেই, আমি তাদের হয়ে কথা বলছি। এটা আমার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। যখন আমি দেখি হাজার হাজার শিশু মারা যাচ্ছে, ওই জায়গাতে আমার দুটি মেয়েকে কল্পনা করি। ওরা যদি ওখানে থাকত? আমি দেখছি, পুরো বিশ্ব ওদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। আমার মন এটা নিতে পারেনি। আইসিসি বলেছে, তাদের নিয়ম অনুযায়ী আমি ম্যাচের মধ্যে ওই জুতো পরতে পারব না। আমি মনে করি, এটা মানবিক আবেদন। আপনাদের সিদ্ধান্তকে সম্মান করি। কিন্তু আমি এর বিরুদ্ধে লড়াই করব। এর জন্য অনুমোদনের প্রয়োজন হলেও, আমি সেটা নেওয়ার চেষ্টা করব। কারণ, স্বাধীনতা সবার অধিকার।’