নসিবুদ্দিন সরকার, হুগলি: আবারও কাজ বন্ধের নোটিশ পড়ল চন্দননগরের গোন্দলপাড়া জুটমিলে। কাজ হারালেন চার হাজার শ্রমিক। এর আগে টানা আড়াই বছর বন্ধ ছিল ওই জুটমিল। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে গত বছর নভেম্বর মাসে জুটমিলটি খোলা হয়। শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ায় উৎপাদনও শুরু হয়। কিন্তু আট মাস অতিবাহিত হতে না হতেই আবারও মিলটিতে বন্ধের নোটিশ ঝোলাল মিল কর্তৃপক্ষ। ফলে ফের অনিশ্চয়তায় চার হাজার শ্রমিক।
জানা গেছে, গোন্দলপাড়ার ওই জুটমিলে গত কয়েকদিন ধরে উৎপাদনকে কেন্দ্র করে শ্রমিক মহলে চাপা অসন্তোষ চলছিল। পাট ঘরের ব্যাচিং বিভাগে উৎপাদন বাড়াতে হবে বলে মিল কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের উপর চাপ সৃষ্টি করে। প্রতিবাদ করায় মিল কর্তৃপক্ষ দুজন শ্রমিককে বসিয়ে দেয়। ওই ঘটনার প্রতিবাদে মিলে শ্রমিক অসন্তোষ আরও বেড়ে যায়। তখনই কর্তৃপক্ষ মিলটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু বিষয়টি সরকারি মহলে জানাজানি হয়ে যাওয়ায় মিল কর্তৃপক্ষ মিল বন্ধের নোটিশ দেওয়া থেকে তখনকার মতো বিরত থাকেন। অন্যান্য দিনের মতো সোমবার সকালে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে আসেন। তখনই তাদের নজরে পড়ে মিলের গেটে লাগানো সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ। মিল কর্তৃপক্ষ একতরফাভাবে নোটিশ দিয়েছে বলে শ্রমিকদের অভিযোগ।
জুটমিলের কয়েকজন শ্রমিক জানান– মিল তো চলছিল। কিন্তু এদিন সকালে দেখা যায় কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়েছে। আগে আড়াই বছর বন্ধ ছিল মিল। তখন কাজের জন্য চারিদিকে ঘুরে বেড়িয়েছি। অভাবের তাড়নায় সংসার চালাতে পারতাম না। যদিও বা আড়াই বছর পর মিল খুলল– তাও আবার বন্ধ হয়ে গেল। অবিলম্বে সমস্যার সমাধান না হলে তাদের না খেয়ে মরতে হবে।
রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না জানান– জুটমিল বন্ধের বিষয়ে শ্রম দফতরে একটি জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই বৈঠকে শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের ও মিল কর্তৃপক্ষকে ডাকা হয়েছে। উভয়ের সুবিধা অসুবিধার বিষয়গুলির সমাধান করে যাতে মিলটি দ্রুত চালু করা যায় সেই চেষ্টা করা হবে।