পারিজাত মোল্লা: বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এর এজলাসে বড়সড় আইনি স্বস্তি পেলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। নওশাদের বিরুদ্ধে থানায় ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়েছিলেন মহিলা । এরপর থেকে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন ওই মহিলা। সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর বেঞ্চ।
তবে আদালত জানিয়েছে -‘ মহিলা মনে করলে বিস্তারিত জানিয়ে থানায় নিরাপত্তার আবেদন করতে পারেন’।এই মামলায় স্বস্তি আইএসএফ নেতা তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির। আপাতত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও নির্দেশ নয় জানিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। এই ঘটনায় অভিযোগকারী নতুন মামলা দায়ের করে দাবি করেন যে, -‘ তাঁকে ক্রমাগত হুমকির শিকার হতে হচ্ছে’।
এদিন বিচারপতি জানিয়েছেন, -‘ আবেদনকারী চাইলে নতুন করে বিস্তারিত জানিয়ে ফের নিরাপত্তার জন্য আবেদন করতে পারেন’।হুমকির বিষয়টি নিয়েও ডোমকল থানাকে বিস্তারিত তথ্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি । গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক তিন দিন আগে ৫ জুলাই নওশাদ সিদ্দিকির বিরুদ্ধে এক মহিলা ধর্ষণ, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ তোলেন। ওই মহিলাকে নওশাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেন সল্টলেক পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৎকালীন তৃণমূলের তরফে ভাঙড়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তৃণমূল নেতা সব্যসাচী দত্ত। প্রথম থেকেই এই অভিযোগকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে উল্লেখ করেছিলেন নওশাদ সিদ্দিকী ।এরপর গত ১২ জুলাই নওশাদের বিরুদ্ধ ওঠা ধর্ষণের মামলায় রক্ষাকবচ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাস এবং বিচারপতি অপূর্ব সিংহ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এই রক্ষাকবচ দিয়েছে।এদিন এজলাসে মামলাকারীর আইনজীবীর কাছে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, -‘পুলিশ এখনও কেন নিরাপত্তা দেয়নি? পুলিশ কি মনে করছেন আবেদনকারীর নিরাপত্তার প্রয়োজন নেই?’ এই অভিযোগ যদি মিথ্যা হয় তাহলে বিপদে পড়বেন অভিযোগকারী এমনটাও সতর্ক করেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।আদালতে নওশাদের আইনজীবী সওয়াল করে জানান, -‘তাঁর মক্কেলের জামিন খারিজের চক্রান্ত চলছে। উনি বিধানসভার একমাত্র আইএসএফ বিধায়ক।
এবার দল তাঁকে ডায়মন্ডহারবার লোকসভায় প্রার্থী করার কথা ভাবছে দল। এই আবহে তাঁর আগাম জামিনের খারিজের চেষ্টায় এটা চক্রান্ত। একেবারে মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে’। ঘটনার পাঁচ বছর পরে অভিযোগ সামনে আনা হয়েছে বলেও আদালতে জানান তাঁর আইনজীবী।বুধবার সব পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে বিচারপতি নির্দেশে জানান, -‘আবেদনকারী মনে করলে নতুন করে বিস্তারিত জানিয়ে ফের নিরাপত্তার জন্য আবেদন করতে পারেন।
ডোমকল থানাকে হুমকি সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে হবে আবেদনকারীকে’। এর আগে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নওশাদ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে সহবাসের অভিযোগ করেন ওই মহিলা । এরপরই নওশাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬, ৫০৬, ৩৪২, ৪১৭ এবং ৩৪ আইপিসি ধারায় মামলা রুজু করে বউবাজার থানা।এফআইআর খারিজ ও আগাম জামিনের আবেদন নিয়ে বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাসের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা দায়ের করেন নওশাদ। প্রথমে নিউটাউন থানায় পরে বউবাজারেও এফআইআর করা হয়েছিল । সেই মামলায় আগেই নওশাদ সিদ্দিকীর জামিন মঞ্জুর করেছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।এই জামিন সময়কালে অভিযোগকারী মহিলা নুতন করে নওশাদের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার মামলা করেন।সেই মামলাতেই এদিন বড়সড় আইনী স্বস্তি পেলেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী।