পুবের কলম ওয়েব ডেস্ক: স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবার ‘হর ঘর তিরঙ্গা’র আহ্বান জানিয়েছিলেন। যদিও মণিপুরের নাগা জনজাতি অধুষ্যিত পাহাড়ি এলাকায় দেখা গিয়েছে ভিন্ন ছবি। সেখানে নাগারা ‘নাগা জাতীয় পতাকা’ উত্তোলন করেছে।
কেন্দ্রের সঙ্গে নাগা শান্তি চুক্তি প্রক্রিয়া এখন অনেকটা স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। এই ‘অচলাবস্থা’র মধ্যে রবিবার নাগারা ‘নাগা জাতীয় পতাকা’ উত্তোলন করেছে। মণিপুরের নাগা অধ্যুষিত এলাকার অনেক গ্রামে ‘নাগা স্বাধীনতা দিবস’ উদ্যাপিত হয়েছে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে।
১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ‘নাগা জাতীয় কাউন্সিল’-এর চরমপন্থীরা ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিল। এটিকে ‘ইন্ডিয়ান নেশন’ থেকে আলাদা করে দেখানোর চেষ্টা ছিল। রবিবার মণিপুরে নাগা স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের ছবি ও ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। মণিপুরের কয়েক’টি জেলায় নাগাদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।
উখরুল জেলা হচ্ছে নাগাদের প্রধান বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘ন্যাশনাল সোশ্যালিস্ট কাউন্সিল অব নাগাল্যান্ড’ (এনএসসিএন-আইএম)-এর সাধারণ সম্পাদক থুইঙ্গালেং মুইভা সহ সংগঠনের অনেক শীর্ষ নেতার জন্মস্থান। এই জেলার একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা গ্রামজুড়ে নাগা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে দিনটি উদযাপন করেছে।
নাগা অদ্যুষিত গ্রামগুলিতে দিনটি উদ্যাপনের জন্য এদিন (১৪ আগস্ট) সকালে কিছু নাগা সংগঠন গ্রামবাসীদের নাগা পতাকা উত্তোলন করতে আহ্বান জানায়। তবে নাগাল্যান্ডের প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে অবশ্য যত্রতত্র বিক্ষিপ্তভাবে ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলির শিবিরগুলিতে নাগা পতাকা দেখা গেলেও অনেক স্তানে ভারতের জাতীয় পতাকাটি আরও বেশি দৃশ্যমান ছিল।
এদিকে, ১৫ আগস্ট ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য মণিপুরের বিজেপি পরিচালিত সরকারের আহ্বানের সমালোচনা করেছে মণিপুরের ছাত্র সংগঠন ‘অল নাগা স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’ (এএনএসএএম)। তাদের অভিযোগ, এই ধরনের আহ্বান প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নাগাদের অধিকার ও অনুভূতি নিয়ে উস্কানি দিচ্ছে।
এএনএসএএম-এর এক বিবৃতিতে এদিন বলা হয়েছে, সেই ১৯৪৭ সাল থেকেই ১৪ আগস্ট নাগারা স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে আসছে। আমরা আশা করি মণিপুর সরকার এই ইতিহাস মাথায় রাখবে। প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে ইন্দো-নাগা শান্তি আলোচনা নিয়ে একটি রাজনৈতিক সমঝোতা বিদ্যমান রয়েছে। এই ধরনের (তিরঙ্গা উত্তোলন) আহ্বান দু’পক্ষের মধ্যে শান্তি চুক্তি ও সমঝোতার গতিকে আঘাত করবে। সরকারের তরফে এভাবে চাপিয়ে দিয়ে তিরঙ্গা উত্তোলনকে আমরা সমর্থন করব না।
প্রসঙ্গেত, নাগা সংগঠনগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের শান্তি আলোচনা ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। তবে নাগারা যেভাবে পৃথক নাগা জাতীয় পতাকা ও নাগা সংবিধানের দাবিতে অনড় রয়েছে তাতে এই শন্তি আলোচনা সফল হচ্ছে না।