পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: হাওড়া স্টেশন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাগুইআটি কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে। মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে সত্যেন্দ্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বার বার মোবাইলের সিম পরিবর্তন করে, পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিল সত্যেন্দ্র। এর মধ্যেই হাতের টাকা ফুরিয়ে যায় ফেরার সত্যেন্দ্রর। গতকাল সিম বদল করে এক আত্মীয়কে ফোন করতেই পুলিশের জালে পড়ে সে। আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে ১৪ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
সিআইডি গতকাল গভীর রাত পর্যন্ত সত্যেন্দ্রকে জেরা করে। জেরায় সত্যেন্দ্রর দাবি, ৫০ হাজার টাকা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় প্রতারক বলে অপমান করত অতনু, সেই আক্রোশেই এই খুন করা হয়েছে। তবে সত্যেন্দ্রর উত্তরে সন্তুষ্ট হয়নি সিআইডি।
অতনুর থেকে নেওয়া বাইক কেনার ৫০ হাজার টাকা চাওয়ায় খুন। বারবার চাওয়ায় টাকা ফেরাতে না পারায় খুন অতনুকে। অতনুর সঙ্গে অভিষেক থাকায় তাকে খুন হতে হয়েছিল। প্রধান টার্গেট ছিল অতনু। জেরায় সত্যেন্দ্র জানিয়েছে, অভিষেককে খুনের কোনও পরিকল্পনা ছিল না তার। শুধুমাত্র তথ্য প্রমাণ লোপাট করতে অভিষেককে খুন করতে হয়েছে তাকে।
জেরায় সত্যেন্দ্র আরও জানিয়েছে, অতনুকে খুন করতে ৪ জন দুষ্কৃতীকে ভাড়া করে নিউ টাউনের একটি হোটেলে ৪ দিন ধরে রেখে দিয়েছিল সত্যেন্দ্র। ২২ অগাস্ট দুপুরে মোটর সাইকেল কিনে দেওয়ার নাম করে অতনুকে ডাকে সে। অতনু পিসতুতো ভাই অভিষেককে সঙ্গে করে নিয়ে পৌঁছয় দেখা করতে।
সিআইডি সূত্রে দাবি, মাসখানেক আগে মোটরসাইকেল কেনার জন্য সত্যেন্দ্রকে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল অতনু। ২ লক্ষ টাকার মধ্যে ভালো মোটরসাইকেল হয়ে যাবে বলে জানিয়েছিল সে। কিন্তু তার পর থেকে নানা কথায় অতনুকে ঘুরিয়ে যাচ্ছিল সত্যেন্দ্র। এমনকী টাকা ফেরত চাইলেও দিচ্ছিল না সে। সত্যেন্দ্রর দাবি, টাকা ফেরত না দেওয়ায় তাঁর স্ত্রীকে উদ্দেশ করে কুকথা বলে অতনু। এর জেরেই কিশোরের ওপর আক্রোশ তৈরি হয় তার। এর পরই অতনুকে খুনের পরিকল্পনা করতে থাকে সে।
অতনুকে নিয়ে ২২ অগাস্ট সন্ধ্যায় রাজারহাটে মোটরসাইকেলের একটি শো রুমে যায় অতনু। কিন্তু সেখানে অতনুর মোটরসাইকেল পছন্দ হয়নি। এর পর অতনু ও অভিষেককে নিয়ে বাসন্তী এক্সপ্রেসওয়ের দিকে চলে যায় সে। রাস্তার ফাঁকা একটি জায়গায় বলে, পিছনের গাড়ি খারাপ হয়ে গিয়েছে। ওদেরও এই গাড়িতে তুলতে হবে। এর পর অতনুদের গাড়িতে যাত্রীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৭ জন। আগে থেকেই গাড়িতে রাখা ছিল দড়ি। রাত ৯টা নাগাদ সেই দড়ি দিয়েই অতনু আর অভিষেককে খুন করে তারা। এর পর ২ জনের দেহ ভেড়িতে ফেলে দিয়ে ভোরের দিকে রুবির কাছে রেখে দেয় খুনে ব্যবহৃত গাড়িটি। অন্য গাড়িতে চড়ে তারা ৫ জন পালায়।