দেবশ্রী মজুমদার, রামপুরহাট: “ভোটে পুরসভা কিংবা পঞ্চায়েতে, ওয়ার্ডে এলাকায় হারলে রেয়াত করা হবে না। ভালো ফল করলে যেমন পুরস্কার দেওয়া হবে। হারলে তেমনি বহিষ্কার জুটবে। প্রধান, কাউন্সিলার, চেয়ারম্যান সবাইকে সরে যেতে হবে। আপনারা জানেন, আমি যা বলি, তা করি। সেক্ষেত্রে ছোট বড় নেতা দেখা হবে না। দায় সবার”।
বুধবার তারাপীঠে পুজো দিতে এসে কর্মিসভায় এক জোট হয়ে কাজ করতে এবং সতর্ক করে গেলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রথমেই পুরসভার কাউন্সিলরদের উদ্দেশ্যে বলেন পুরসভা নির্বাচনে তো আপনারা প্রচুর ভোটে জেতেন। কিন্তু লোকসভা কিংবা বিধানসভা নির্বাচনে আমরা পিছিয়ে পড়ি। তাহলেই নিশ্চয় আপনারা বিধানসভা, লোকসভা নির্বাচনে খাটেন না! এবার এরকম হলে আমি রেয়াত করব না। যে সমস্ত এলাকায় হারব সেই কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান, শহর সভাপতি সকলকে প্রথমে তিরস্কার করা হবে। এরপর বহিষ্কার করা হবে। একই পদক্ষেপ নেওয়া হবে অঞ্চল এবং ব্লকের ক্ষেত্রে”।
পাশাপাশি, তিনি বলেন, অসমের হেমন্ত বিশ্বশর্মার এই পরিকল্পনা। সিএএ হলেই, এন আর সি হয়ে যাবে। যদি ভুল বলে থাকি, তাহলে মোদী দম থাকলে লিখিত দেন। অসমের মুখ্যমন্ত্রী এটা চালু করেছেন। চোদ্দ লক্ষ হিন্দু এর আওতায় আজ নাগরিকতা হীন। একই অবস্থা মুসলিমদেরও। মোদি কোভিডের নাম করে সমস্ত সাংসদদের কাছ থেকে দুটো টার্মের মোট আটশো হাজার কোটি টাকা কেটে নিয়ে প্লেন কিনেছে।
এদিন দুপুরে তারাপীঠের আটলা মোড়ে একটি বেসরকারি হোটেলে ওঠেন তিনি। সেখানেই কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন। এদিন ঘণ্টা দেড়েকের বৈঠকে অভিষেক নেতা কর্মীদের পরিষ্কার বুঝিয়ে দেন দায়সারা ভোট করলে বরদাস্ত করা হবে না। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকলে ভোটের পর বসে মিটিয়ে নেন। কিন্তু ভোটে যেন তার প্রভাব না পড়ে”। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বস্ত্র মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা, সাংসদ অসিত মাল, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি ফায়েজুল হক ওরফে কাজল শেখ।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অনুব্রত প্রসঙ্গে বলেন, “অনুব্রত যদি বিজেপিতে যোগদান করত তাহলে জেল খাটতে হত না। ঠিক যেভাবে অজিত পাওয়ার, শুভেন্দু অধিকারী, হিমন্ত বিশ্বশর্মা, নারায়ণ রানে ধোয়া তুলসীপাতা হয়ে গিয়েছেন ৷ অনুব্রত জেলে থাকার পরও তো গরু পাচার হচ্ছে। গরু আসছে বিহার, উত্তরপ্রদেশ থেকে। ওই দুই রাজ্যে তো বিজেপি এবং তাদের শরিক সরকার রয়েছে। ইডি, সিবিআই দুই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের একবারও জিজ্ঞাসা করেছে কিভাবে সে রাজ্য থেকে গরু আসছে। অনুব্রত মণ্ডল এতদিন জেলে তাও উত্তরপ্রদেশ, বিহার থেকে গরুপাচার হচ্ছে, যা বিজেপির রাজ্য ৷ কীভাবে?
ইডি-সিবিআই শেষ কথা বলে না, সাধারণ মানুষই গণতন্ত্রের শেষ কথা বলে।” বিজেপির হাতে ইডি, সিবিআই ছাড়া কিছু নেই। তবে ইডি, সিবিআই শেষ কথা বলে না। শেষ কথা বলে জনগণ। লোকসভা ভোটে তার ফলাফল পাওয়া যাবে। আমরা বীরভূমের দুটি আসনে মার্জিন বাড়িয়ে জিতব। আর রাজ্যে গতবারের থেকে আসন বাড়বে।“