রুবাইয়া জুঁই: আগ্রার তাজমহলকে ভালোবাসার অন্যতম নিদর্শন বলা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাজমহলের প্রেমের স্তুতিও পৌঁছে গিয়েছে দেশ কালের সীমানা ছাড়িয়ে। বলা হয় শাহজাহান স্ত্রী মুমতাজের জন্যই এই তাজমহল তৈরি করেছেন। আর ঠিক এরকমই এক ভালোবাসার নজির দেখা গেল এবার হায়দরাবাদেও। অবশ্য এই গল্পে শাহজাহান নয় বরং মুমতাজ তাঁর স্বামীকে নিজের লিভার দান করলেন।
জানা যায়, ভেঙ্কটা সুবা রেড্ডি গুরুতর লিভারের অসুখে ভুগছিলেন এবং ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল তাঁর শারীরিক অবস্থা। যা মৃত্যুর দিকেই নিয়ে যাচ্ছিল তাঁকে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাঁর লিভার প্রতিস্থাপন করতে হত। এই অবস্থায় স্ত্রী মুমতাজ পাশে দাঁড়ান এবং স্বামীর প্রাণ বাঁচাতে নিজের লিভার দান করেন। আদতে মুমতাজ নামে এই মুসলিম মহিলা তাঁর হিন্দু স্বামী ভেঙ্কটা সুবা রেড্ডিকে বাঁচাতে তাঁর নিজের লিভার দান করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নিদর্শন তৈরি করলেন।
উল্লেখ্য হায়দরাবাদের গ্লেনিগেলস গ্লোবাল হাসপাতালের চিকিৎসকরা এই বছরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে মমতাজের লিভারটি সফলভাবে তাঁর স্বামী ভেঙ্কাটা সুবা রেড্ডির মধ্যে প্রতিস্থাপন করেন।যার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতির দিকে এগোচ্ছিল। শুধু মুমতাজই নয়, এমনকি মুমতাজের মুসলিম পরিবারের সদস্যরাও সুবা রেড্ডির লিভার দান করতে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন এবং সব সময় পাশে ছিলেন। যা প্রমাণ করে যে, সামাজিক মতভেদকে হারিয়ে আজও প্রেমের সম্পর্ক তথা আত্মিক সম্পর্কেরই জয় হয়। তবে, শুধুমাত্র মুমতাজের লিভারই সুবা রেড্ডির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয় এবং যা তড়িঘড়ি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন ছিল। গ্লেনিগেলস গ্লোবাল হাসপাতালে এই অপারেশনটি হয়। গ্লেনিগেলস গ্লোবাল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন রাঘভেন্দ্র জানান যে, সফলভাবে তাঁর লিভার প্রতিস্থাপন হয়েছে এবং বর্তমানে তিনি সুস্থ রয়েছেন। মুমতাজও দিনরাত্রি এক করে স্বামীকে দেখভাল করছেন।আর এরফলে ধীরেধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন সুবা রেড্ডি। চিকিৎসকরাও জানান যে, সুবা রেড্ডির মতো রোগীদের ক্ষেত্রে পরিবারের সমর্থন অত্যন্ত জরুরি। জানা যায়, অন্ধ্রপ্রদেশের কদপা জেলার প্রোদাদাতুর শহরে অবস্থিত এই দম্পতির এক পুত্র এবং দুই কন্যা সন্তান রয়েছে।