পুবের কলম, ওয়েবডেস্ক: অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় অশনি ক্রমশই এগিয়ে চলেছে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলের দিকে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিশাখাপত্তনমে শুরু হয়েছে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি। সেইসঙ্গে বইছে ঝোড়ো হাওয়া। খারাপ আবহাওয়ার কারণে একাধিক বিমান বাতিল করল বিশাখাপত্তনম বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে রয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া, এয়ার এশিয়া ও ইন্ডিগো।
বিশাখাপত্তনম এয়ারপোর্ট ডিরেক্টর শ্রীনিবাস জানিয়েছেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণে ইন্ডিগো বিমান কর্তৃপক্ষ আসা ও যাওয়ার ২৩টি বিমান বতিল করেছে। এয়ার ইন্ডিয়া ও এয়ার এশিয়াও তাদের কয়েকটি বিমান বাতিল করেছে। স্পাইসজেট এখনও তাদের বিমান চলাচলের আপডেট ঘোষণা করেনি, তাদের বিমান চলাচলগুলি এখনও সন্ধ্যার জন্য নির্ধারিত আছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে এই সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া দফতর (আইএমডি)-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টি চলবে। সমুo উপকূলবর্তী অঞ্চলে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
এই খবর লেখা পর্যন্ত পুরী থেকে ৫১০ কিলোমিটার, কাঁকিনাড়া থেকে ২৬০ কিলোমিটার, গোপালপুর থেকে ৪৯০ কিলোমিটার ও বিশাখাপত্তনম থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে অশনি। তবে ক্রমশ উত্তর-পশ্চিমে এগিয়ে চলেছে এই ঘূর্ণিঝড়। তবে এই ঝড় স্থলপথে ল্যান্ডফল করবে না, সমুoে বিলীন হয়ে যাবে। এর পর এটি শক্তি হারিয়ে ১২ মে এটি একটি শক্তিশালী নিম্নচাপে পরিণত হবে। মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার বৃষ্টির সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া। সেই হাওয়ার গতিবেগ ঘন্টায় ৪০/৫০ কিলোমিটার থেকে শুরু করে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় অশনি সম্ভবত ১০ মে রাত পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে এবং উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল এবং পার্শ্ববর্তী ওড়িশা উপকূল হয়ে পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে পৌঁছবে। মঙ্গলবার থেকে উপকূলীয় অঞ্চলে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।
ওড়িশার জেলার খুরদা, গঞ্জাম, পুরী, কটক এবং ভoকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সোমবার এই উপকূলীয় জেলায় বসবাসকারী লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।
স্পেশাল রিলিফ কমিশনার (এসআরসি) পিকে জেনা জানিয়েছেন, সোমবার গঞ্জাম জেলার সুনাপুর উপকূল থেকে ১১ জন আটকে পড়া মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের নৌকাগুলি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে আটকে পড়েছিল। জোয়ার-ভাটার কারণে মৎস্যজীবীরা জলের মধ্যে দিক্-নির্দেশ করতে পারছিলেন না। পারাদ্বীপের কোস্ট গার্ড ডিআইজি প্রদীপের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে একযোগে অভিযান চালিয়ে ১১ জন আটকে পড়া মৎস্যজীবীকে উদ্ধার করা হয়।
অশনির প্রভাবে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চল-সহ কলকাতা, হাওড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, দুই পরগনা সহ নদিয়া জেলাগুলিতে সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কলকাতা-সহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলিতে সকালে থেকেই চলে মুষলধারে বৃষ্টি। এর ফলে সেই চেনা জল জমার চিহ্ন দেখা দেয় সর্বত্র। শহরে বহু রাস্তায় যানজট তৈরি হয়। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ দিন বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কলকাতায় ৫৮ মিলিমিটার ও সল্টলেকে ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।