আহমদ হাসান ইমরান: মাহে রবিউল আউয়াল। রাসূল মুহাম্মদ সা.-এর জন্মমাস। এই মহত্ত্বপূর্ণ মাসটির মাত্র আর দিন কয়েক বাকি রয়েছে।
পৃথিবীর বেশির ভাগ মুসলিম ও অমুসলিম দেশে রবিউল আউয়াল মাস জুড়ে নবী সা.-এর শানে বেশকিছু অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানগুলির লক্ষ্য হচ্ছে, নবীর শিক্ষা, জীবনাচরণ ও সুন্নাহকে আমাদের জীবন ও সমাজে নতুন করে পুনরুজ্জীবিত করা।
আমরা দৈনিক পুবের কলম, বঙ্গীয় সংখ্যালঘু বুদ্ধিজীবী মঞ্চ ও ‘একটি কুসুম’ সংস্থার সম্মিলিত উদ্যোগে ২৩ অক্টোবর, ২০২২ রাসূল মুহাম্মদ সা.-এর আদর্শ ও নির্দেশনার উপর একটি আলোচনাচক্রে আয়োজন করেছি।
এই অনুষ্ঠানে আমরা আহ্বান করেছি বাংলার কয়েকজন খ্যাতনামা রাজনীতিবিদ্, মুসলিম ও অমুসলিম বুদ্ধিজীবীদের। ইচ্ছে করলে আমরা বেশ কয়েকজন খ্যাতনামা আলেম ও ইসলাম-বিশেষজ্ঞদেরও এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানাতে পারতাম। কিন্তু আমরা জানতে চাই, আমাদের রাজনীতিবিদ্রা ইসলাম ও নবী সা. সম্পর্কে কি ধরনের ধারণা পোষণ করেন, মুসলিমরা তাঁদের সঙ্গে কতটা যোগাযোগ রাখেন এবং বাংলায় সুষ্ঠু সমাজ গঠন ও সব ধর্মের মানুষকে নিয়ে চলার জন্য তাঁদের পরামর্শ কি।
পরিচিতি অপরিচয়ের অন্ধকার দেওয়ালকে যে ভেঙে দেয় তা আমরা জানি। আমরা আমন্ত্রিতদের কাছ থেকে শুনতে চাই, কি করে বর্তমানের ঘৃণা-বিদ্বেষ প্রচারের চেষ্টাকে রোখা যায়। বিদ্বেষ ফোবিয়া, হেট স্পিচ, ফেক নিউজ ও ভিডিয়োকে কিভাবে প্রতিহত করে শান্তি-সম্প্রীতি ও উন্নয়নের বার্তাকে আমরা সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি।
এই বাংলায় ইসলামের রয়েছে কমবেশি হাজার বছরের ঐতিহ্য। সবাই স্বীকার করেন, এই বাংলায় তরবারির জোরে ইসলাম প্রচার হয়নি। বরং সুফি-সাধকদের সাম্য ও মৈত্রীর বাণী, নিম্নবর্ণ ও বৌদ্ধদের ইনসাফের খোঁজে ইসলাম গ্রহণই হচ্ছে, বাংলা-অসমে ইসলাম প্রচারের মূল ইতিহাস।
অখণ্ড বাংলায় হিন্দু-মুসলিম হাতে হাত রেখে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বসবাস করেছেন। সুলতানী আমল ও পরবর্তীতে নবাবদের শাসনেও বাংলায় সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে। বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন কবিরা নবী জীবনের প্রসঙ্গ এনেছেন। অনেক পরে পুঁথি-সাহিত্যেও এসেছে নবী জীবন। আর বাংলা গদ্যে হিন্দুরাও নবী জীবন লেখার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
আল্লাহর নবী ছিলেন ‘লিবারেটার অফ হিউম্যানিটি’ অর্থাৎ মানবতার মুক্তি সাধক। তিনি মানুষকে মানুষের আধিপত্য থেকে মুক্ত করেছেন। গরিবদের জন্য দারিদ্র বিমোচনের পথ দেখিয়েছেন। নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেন। নেশা মুক্তি, সুদ, জুয়া এবং সামগ্রিক ইনসাফ প্রতিষ্ঠা, সৃষ্টির সেবা সবক্ষেত্রে মানুষকে মুক্তির দিশা দিয়েছেন। তাই এই মুহাম্মদ সা.-কে আমাদের সকলকেই জানতে হবে।