শুভজিৎ দেবনাথ– গয়েরকাটা জীবনের ঝুকি নিয়ে বসবাস করছেন বানারহাট ব্লকের সাঁকোয়াঝোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের জ্যোর্তিময় কলোনি ও বিবেকানন্দ পল্লী– দুই গ্রামের নদীর পাড়ে বসবাসকারী বাসিন্দারা। দু বছর ধরে বর্ষাযü নদী ভাঙনের পাশাপাশি গ্রামের গা ঘেঁষে চলে বইছে নদীর জল স্রোত। স্বাভাবিকভাবে আকাশে কালো মেঘ দেখলেই রাতের ঘুম উড়ে যায় নদীর পাড়ে বসবাসকারী বাসিন্দাদের।
প্রতি বছর প্রবল বর্ষনে প্লাবিত হয়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঘর বাড়ি। এমনকি গ্রাম পঞ্চাযেüত থেকে ২০০৮ সালে পাথরের বাঁধ নির্মাণ করা হলেও সেটিও রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে করুণ অবস্থায় রয়েছে। সেচ দফতরের এসডিও বহুবার এলাকা পরিদর্শন করে গেলেও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ।
এমন কি গ্রাম পঞ্চাযেüতের তরফে কাজ করতে বোল্ডার ফেললেও সেচ দফতরের তরফে মেলেনি অনুমতি। ধূপগুড়ির বিডিও বিষয়টি জানা সত্ত্বেও কোনও উদ্যোগ গ্রহণ করেননি বলেই স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য গোপাল চক্রবর্তীর অভিযোগ। গ্রামবাসীর দাবি– বর্ষায় এই এলাকায় নদী ভাঙন রুখতে এবং তাদের ঘর বাড়ি রক্ষা করতে দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হোক। এদিকে বর্ষা শুরুর আগেই আতঙ্কের জেরে এবারে আর প্রশাসনের উপর ভরসা না করে বাসিন্দারা নিজেরাই বস্তায় বালি-পাথর ভরে ‘বাঁধ’ নির্মাণের উদ্যোগ শুরু করেছে।
পঞ্চায়েত সূত্রে খবর– আনুমানিক ১৫০ পরিবারের বসবাস এই দুই গ্রামে। প্রতিবছর বর্ষায় নদী ভয়াবহ রুপ ধারণ করে। ঘর বাড়ি ছেড়ে সকলে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা মতিউর রহমান– আসমা খাতুন– মনোবলা রাযু,মঞ্জু শা প্রমুখ জানান– প্রতিবছর বর্ষায ঘর বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয় । গত বছর বর্ষায় দুটো বাড়ি নদীর জলে ভেসে গিয়েছে। কোনওরকম সাহায্য পাননি । পঞ্চাযেüত একটা ত্রিপল পর্যন্ত দেয় না। “আমরা শুধুমাত্র বাঁধ চাই– যাতে বর্ষায় একটু শান্তিতে বসবাস করতে পারি। বছরের পর বছর নেতারা এসে ছবি তুলে নিয়ে যায়– কাজের কাজ কিছুই হয়নি। বৃষ্টি হলেই আমাদের রাতের ঘুম উবে যায়। ঘর ছেড়ে ক্লাবে আশ্রয় নিতে হয়।
স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চাযেüত সদস্য তথা গ্রাম পঞ্চাযেüতের শিল্প ও পরিকাঠামোর সঞ্চালক গোপাল চক্রবর্তী বলেন– “গ্রামবাসীর দাবি পুরোপুরি সঠিক। দুটি গ্রাম মিলে মোট ১৫০টি পরিবারের বসবাস ওই এলাকায় বর্ষায় এলাকা ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। গতবছর আমি অসুস্থ থাকার কারণে যেতে পারিনি। তবে আমাদের পঞ্চায়ত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ সীমা চৌধুরী রাতভর সেখানে থেকে প্রত্যেককে উদ্ধার করেন। একাধিকবার সেচ দফতরের এইচডিও পরিদর্শন করেছেন– কোনওরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বারংবার আমরা জানানোর পরও কোনওরকমভাবে আমাদের কথার কর্ণপাত করেনি।”
এদিকে এলাকার বাসিন্দারা নদী থেকে অবৈধভাবে বালি-পাথর তুলতে শুরু করেছে– যার ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হতে পারে। শেষে বাধ্য হয়ে আমরা যখন গ্রাম পঞ্চায়েতের থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করি বাঁধ নির্মাণ করার– বোল্ডার পর্যন্ত ফেলি– সেচ দফতর আমাদের কাজ করার অনুমতি দেয়নি। তাই কাজটি অধরা রয়ে গেছে। আমরা এবার বিষযüটি নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব।
এ বিষয়ে সেচ দফতরের বানারহাট সাব ডিভিশনের এইচডিও সুব্রত শুরকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান– গত বছর বর্ষায় আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষযüটি |র্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আবারও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। পাশাপাশি তিনি আরও জানান– দু-বছরে ওই গ্রাম পঞ্চাযেüতের বিঘা লাইন ও টিন লাইন এলাকায় কয়েক কোটি টাকা খরচ করে বড় বাঁধ নির্মাণ করা হযেüছে। এবং এখনও দু-জায়গায় বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে।