পুবের কলম প্রতিবেদক: রাজ্যের সাত কেন্দ্রে বিধানসভার উপনির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল যখন জাতীয় নির্বাচন কমিশনে দরবার করছে, প্রায় তার কাছাকাছি সময়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিলেন, ভবানীপুরের অনেক ওয়ার্ডই এখন কোভিডমুক্ত। তাহলে উপনির্বাচন করতে অসুবিধা কোথায়? মমতার কথায়, আমি ভবানীপুর নিয়ে কলকাতা পুরসভার একটা রিপোর্ট দেখছিলাম। অনেক ওয়ার্ডই কোভিডশূন্য। কোনও সন্দেহ নেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভবানীপুর-সহ ৭ কেন্দ্রে উপনির্বাচন করানো সম্ভব। এর আগে জাতীয় নির্বাচন কমিশন রাজ্যসভা ভোট করানো নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মতামত চেয়েছিল। তখন রাজ্য সরকারের তরফে তাদের জানানো হয়, রাজ্যসভা তো বটেই, পশ্চিমবঙ্গে এখন সাতটি বিধানসভার উপনির্বাচনও করানো সম্ভব।
বস্তুত, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এদিন দাবি করেছেন, সাতটি আসনেই উপনির্বাচন করানো উচিৎ। কারণ হিসাবে তৃণমূল সুপ্রিমো তুলে ধরেন, সংবিধান অনুযায়ী, আইন অনুযায়ী ভোটের ফল প্রকাশের ছ’মাসের মধ্যে উপনির্বাচন করাতে হবে। ফলে আমরা বেআইনি বা অসাংবিধানিক কিছু চাইছি না। কিন্তু বিজেপি জানে, ওরা প্রতিটায় হারবে! তাই ওরা ভোট চাইছে না। সেই সূত্রেই বৃহস্পতিবার মমতা বলেন, আমরা ওদের বলেছিলাম, রাজ্যসভা তো বটেই। বিধানসভা ভোটের জন্যও আমরা তৈরি। উপনির্বাচন তো হবে একেকটা বিচ্ছিন্ন এলাকায়। তা ছাড়া গোটা রাজ্যেই কোভিড এখন অনেকটা কমে এসেছে।
অনেকের মতে মুখ্যমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন, বিজেপির অঙ্গুলিহেলনেই উপনির্বাচন হচ্ছে না। এমনিতে এই বিপুল ব্যবধানে তৃণমূল সরকারের প্রত্যাবর্তনের পর উপনির্বাচনে তেমন কোনও গুরুত্ব নেই। তবে এক দিক থেকে গুরুত্ব অপরিসীম। তা হল, মমতাকেও ভোটে দাঁড়িয়ে জিততে হবে। কারণ নন্দীগ্রামে হেরে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। যদিও গণনা নিয়ে মামলা চলছে হাইকোর্টে। তৃণমূলের অনেকের বক্তব্য, বিজেপি যে ভাবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে দখল করছে তাতে নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে তাঁরা মমতার জিতে আসা আটকাতে চাইছে। এর আগেও মমতা একবার বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশন চলছে অমিত শাহের দফতরের নির্দেশে। তাঁদের বক্তব্য, বিজেপি আসলে চাইছে জটিলতা তৈরি করতে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল স্পষ্ট করেছে, ভবানীপুরে প্রার্থী হবেন মমতা। তাই শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় সেখান থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁকে দাঁড় করানো হবে খড়দহে। হতে পারে সেকারণেই আজ মমতা ভবানীপুরের কোভিড তথ্য উল্লেখ করেছেন। মমতা যখন এদিন নবান্নে একথা বলছেন, প্রায় সেই সময়েই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দফতরে উপনির্বাচনে দাবি জানাতে গিয়েছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল।
যদিও বিজেপির বক্তব্য, গতকালই নবান্ন বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বলেছে, রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক জমায়েত করা যাবে না। ভোট হলে তো প্রচারের ব্যাপার আছে। আগে রাজ্য সরকার সব স্বাভাবিক করার নির্দেশিকা দিক, বিজেপি একটু রাস্তায় নামুক, তারপর তো ভোট।