পুবের কলম ওয়েবডেস্কঃ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশনের (ইউএসসিআইআরএফ) এক কর্মকর্তা বলেছেন, “ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে আন্তঃধর্মীয় বিবাহকে অপরাধ বলে গণ্য করে একটি বৈষম্যমূলক আইন করা হয়েছে ।এর ফলে ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা কমিশনের সিনিয়র নীতি বিশ্লেষক নায়লা মোহাম্মদ বলেন, “সিএএ, এনআরসি’র পর কথিত ‘লাভ জিহাদ’ বন্ধে নতুন আইন এনেছে ভারতের কয়েকটি রাজ্য।।
কট্টর হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির প্রণীত এ আইন ‘মুসলিমবিরোধী অ্যাজেন্ডা’ থেকেই উদ্ভূত বলে মনে করছেন সুধীজনরা। মানবাধিকার কর্মীরা আইনটির সমালোচনায় সরব হয়েছেন। এই আইন প্রায়শই সহিংসতার ঘটনা ঘটায় এবং ধর্মান্তরের মিথ্যা বিবরণ ব্যবহার করে আন্তঃসত্য বিবাহ নিষিদ্ধ করার প্রয়াস চলছে সেখানে।”
উল্লেখ্য,হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করছে যে এক শ্রেণির মুসলমান যুবক হিন্দু নারীদের কাছে প্রেমের অভিনয় করে এবং ধর্ম পরিবর্তন করিয়ে বিয়ে করে।
তাদের কথায়, লাভ বা প্রেমের মাধ্যমে ”জিহাদ” করা হচ্ছে এভাবে। যদিও এর আগে একাধিক এরকম অভিযোগের তদন্ত করেও তথাকথিত লাভ জিহাদের অস্তিত্ব পাওয়া যায় নি বলেই সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
নায়লা মোহাম্মদ বলেন, গত মাসে উত্তরপ্রদেশের দুটি মসজিদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা বেশ উদ্বেগজনক।”তিনি আরও বলেন,নাগরিক সমাজের ধারণা, রাষ্ট্রের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ব্যর্থতার কারণে অনেক আগে থেকেই বিরোধীদের সমালোচনার মুখে রয়েছে সরকার।
এর মধ্যে কৃষক বিদ্রোহ শুরু হলে এটিকে দমনে ধর্মের ব্যবহার করতে না পেরে একের পর এক বিজেপিশাসিত রাজ্যে কথিত ‘লাভ জিহাদবিরোধী আইন’ পাস করা হয়েছে, যাতে মূল ব্যর্থতা আড়াল করা যায়।
এর আগে মার্কিন ধর্মীয় অধিকার সংক্রান্ত কমিটি নাগরিকত্ব সংশোধন বিলকে ‘ভ্রান্ত দিশায় এক বিপজ্জনক মোড়’ বলে উল্লেখ করে। তারা বলে, এটি ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ বহুমুখী ঐতিহ্যের সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ভারতীয় সংবিধান, যাতে আইনের চোখে ধর্মীয় পরিচয় নির্বিশেষে সমান মর্যাদা নিশ্চিত করা হয়েছে, তার পরিপন্থী।
মার্কিন কংগ্রেস গঠিত এই কমিটি স্বাধীন, দ্বিস্তরীয় ফেডেরাল সরকারি সংস্থা। তারা দুনিয়াব্যাপী ধর্মীয় স্বাধীনতার সামনে বিপদ খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেয়। কমিটি তার ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, তারা ধর্মের ভিত্তিতে নির্যাতন রোধ ও ধর্মীয় বিশ্বাস, মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা জোরদার করার লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট, বিদেশ সচিব ও কংগ্রেসকে বৈদেশিক নীতি সংক্রান্ত সুপারিশ দেয়।
২০০৮-এর জুলাইয়ে তত্কালীন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ট্যুরিস্ট ভিসা প্রত্যাখ্যান করার আগের সিদ্ধান্তে অটল থাকতে মার্কিন বিদেশ দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছিল এই কমিটি।