শুভজিৎ দেবনাথ,গয়েরকাটা: বিদ্যালয়ে দেরী করে শিক্ষকদের আসা ও ছাত্রছাত্রীদের মিড ডে মিল নিয়ে কারচুপির অভিযোগ তুলে বিদ্যালয়ে এসে বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসীরা। বুধবার বেলা ১১ টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে ধূপগুড়ি পশ্চিম সার্কেলের অন্তর্গত উত্তরডাঙ্গাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রতিদিন বিদ্যালয়ে দেরী করে আসেন। এছাড়া মিড ডে মিলে ছাত্রছাত্রীদের সরকারি নিয়ম অনুযায়ী খাবার দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়দের বিক্ষোভে ব্যাহত হয় স্কুলের পঠন পাঠন। শিক্ষকরা দেরী করে আসায় ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণীকক্ষ থেকে বের করে মাঠে নিয়ে আসেন স্থানীয়রাই। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন ধূপগুড়ি পশ্চিম সার্কেলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক রাজদীপ সরকার। তিনি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে তাদের অভিযোগ শোনার পড়ে ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলার পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
উত্তরডাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, উত্তরডাঙ্গাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ১ থেকে ৮ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের মিড ডে মিলের মেনুতে ডিম ছিল না। অতিরিক্ত পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে এমাসে এখনও পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা মাংস বা ডিম –ফল পায়নি। বুধবার স্কুলের মিড ডে মিলের তালিকায় ডিম-ভাত থাকলেও রান্না করা হচ্ছিল ভাত- আলুর ঝোল।
বিদ্যালয়ের ৯০ জন ছাত্রছাত্রীর জন্য সেখানে ৪ জন স্থায়ী ও ২ জন পার্শ্ব শিক্ষক রয়েছেন। তবে স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রতিদিন বিদ্যালয়ে দেরী করে আসেন। স্থানীয়দের মধ্যে জগদীশ চন্দ্র অধিকারী, বসন্ত অধিকারী রা জানান, ‘ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রতিদিন দেরী করে আসেন। ছাত্রছাত্রীদের মিড ডে মিল সঠিক ভাবে দেওয়া হয় না। এমাসের ৭ দিন কেটে গেলেও ছাত্রছাত্রীদের কপালে ডিম , মাংস , ফল কিছুই জোটে নি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা এদিন বিদ্যালয়ে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করি। বিদ্যালয়ে এস আই সাহেব এলে আমরা তাকেও বিষয়টি জানাই। অবস্থার পরিবর্তন না হলে আমরা আবার বিদ্যালয়ে আসবো। ’ এক অভিভাবক মহেশ রায় জানান, ‘ স্কুলে শিক্ষকরা দেরী করে আসেন। তাই আমার মেয়েও একদিন ১১ টায় স্কুলে আসে। আমরা চাই এই স্কুলে সবকিছু নিয়ম করে চলুক। ’ এদিন জেলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ভবতোষ সরকার। তাকে বারংবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন তোলেন নি, তাই তার প্রতিক্রিয়া মেলে নি । ধূপগুড়ি পশ্চিম সার্কেলের এস আই রাজদীপ সরকার বলেন, ‘ আমি এই বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দেরী করে আসা নিয়ে আগেও অভিযোগ পেয়েছিলাম। এদিন আবার ও সেই অভিযোগ পেয়ে আমি বিদ্যালয়ে এসে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছি। স্থানীয়দের আরও যা যা অভিযোগ রয়েছে তা আমাকে লিখিত ভাবে দেওয়া হয়েছে। অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষকদের নিয়ে আমি তাড়াতাড়ি আলোচনায় বসবো। তারপর পরিস্থিতির পরিবর্তন না হলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’